পিরোজপুর প্রতিনিধি: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পিরোজপুর-২ (ভান্ডারিয়া, কাউখালী, নেছারাবাদ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন আহম্মদ সোহেল মনজুর সুমন। দলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মধ্যেও তাঁর নাম এখন আলোচনার শীর্ষে।

আহম্মদ সোহেল মনজুরের পিতা প্রয়াত এডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম মনজুর ছিলেন দেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিক—সাবেক এম.এন.এ ও এম.পি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধের নবম সেক্টরের বেসামরিক প্রধান। তাঁর মাতা ডা. সুফিয়া বেগম মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর)।

রাজনৈতিক জীবনের সূচনা থেকেই সোহেল মনজুর বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তিনি পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এবং বর্তমানে ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে “ধানের শীষ” প্রতীকে পিরোজপুর-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় সোহেল মনজুর তাঁর পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর পিতা মো. নুরুল ইসলাম মনজুর বিএনপির প্রার্থী হলে তিনি প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।

২০২৩ সালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের সময় তিনি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। ওই হামলায় তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং চালকসহ সহযাত্রীরা গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে তাঁকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়, যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।

শিক্ষাজীবনে তিনি এসএসসি সম্পন্ন করেন রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা থেকে, এইচএসসি নটরডেম কলেজ থেকে, বিবিএ সম্পন্ন করেন অ্যাসাম্পশন ইউনিভার্সিটি, ব্যাংকক (থাইল্যান্ড) থেকে এবং এমবিএ সম্পন্ন করেন ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টন, টেক্সাস (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। রাজনীতি ছাড়াও আহম্মদ সোহেল মনজুর দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদ্রাসা, এতিমখানা, মন্দির ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত থেকে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন।

এ বিষয়ে আহম্মদ সোহেল মনজুর সুমন বলেন, “আমি রাজনীতিকে ব্যক্তিগত লাভের মাধ্যম হিসেবে দেখি না, বরং জনগণের সেবা ও দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নেওয়াই আমার লক্ষ্য। আমার পিতা প্রয়াত এডভোকেট নুরুল ইসলাম মনজুর জনগণের কল্যাণে আজীবন কাজ করে গেছেন—আমি তাঁর সেই আদর্শকে ধারণ করে রাজনীতি করছি। বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা আমার শক্তি। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের ভালোবাসা ও দলের আস্থা পেলে পিরোজপুর-২ আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে বিজয় অর্জন করা সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের দমন-পীড়ন ও অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন করছে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে। আমি সেই আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে সবসময় মাঠে আছি এবং থাকবো।”

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা এবং পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য তাঁকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় শীর্ষস্থানে নিয়ে এসেছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আহম্মদ সোহেল মনজুর সুমনকে নিয়ে এলাকাজুড়ে জোর আলোচনা চলছে।