লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলা থেকে পল্লী বিদ্যুতের ৩১টি ট্রান্সফরমার খুলনা নেওয়ার পথে বরিশালে আটক হলেও মূল হোতা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন।
পল্লী বিদ্যুতের লালমোহন জোনাল অফিসের জুনিয়র অফিসারকে দিয়ে কেবল মাত্র একটি চুরির মামলা দায়ের করে দায়মুক্তির চেস্টা চালাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। এদিকে লালমোহন জোনাল অফিস ও অভিযুক্ত ঠিকাদার জব্দকৃত ট্রান্সফরমারগুলো অকেজো দেখানোর পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ধরা পড়ার কারণে এ দফায় ৩১টি ট্রান্সফরমার জব্দ হলেও এরআগেও এভাবে গোপনে ট্রান্সফরমার বিক্রি হতো কি না তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।
এ ঘটনায় অনুসন্ধানের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আদালত। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, পল্লী বিদ্যুত সমিতি ও পিডিবি’র প্রতিনিধি নিয়ে ৩ সদস্য বিশিস্ট এই কমিটি গঠন করা হয়। এদিকে ট্রাকসহ ট্রান্সফরমারগুলো জব্দের সময় আটক ২ ব্যক্তি বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।
তারা ট্রাক চালক ও বহনকারী। তবে অভিযুক্ত ঠিকাদার এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। নৈপথ্যে থেকে তার অপতৎপরতা চলমান রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর লালমোহন থেকে খুলনা নেওয়ার পথে বরিশাল বিমানবন্দর থানা এলাকায় পুলিশের হাতে ৩১টি ট্রান্সফরমারসহ একটি ট্রাক জব্দ হয়। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ট্রাকে থাকা দুই ব্যক্তি খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার শওকত হোসেনের ছেলে মো. সজল ও ভোলার শশীভূষণ থানার ইসমাইল সরদারের ছেলে মো. হাসানকে ওই সময় আটক করা হয়। তখন জিজ্ঞাসাবাদে ট্রান্সফরমারগুলো লালমোহন থেকে নিয়ে গেছে বলে স্বীকার করেন তারা।
এগুলো পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার সাদ্দাম হোসেন গত ফেব্রæয়ারি মাসে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্টোর থেকে দুইটি কার্যাদেশের বিপরীতে উত্তোলন করেন। ওই ঠিকাদার চরফ্যাশন উপজেলার চেয়ারম্যান হাট এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে।
তিনি চরফ্যাশন ও লালমোহন উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদারি কাজে নিয়োজিত। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের দাবি, শুধু ঠিকাদার এককভাবে এগুলো এক এলাকার মালামাল অন্য এলাকায় নিতে সাহস করেন না।
এর সঙ্গে অফিসের কেউ না কেউ জড়িত থাকতে পারে। পল্লী বিদ্যুতের এসব মালামাল অন্য এলাকায় নেওয়া নিয়মবহির্ভূত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মামলার সূত্র মতে, গত ফেব্রæয়ারি মাসে ২টি কার্যাদেশের মাধ্যমে ঠিকাদার সাদ্দাম হোসেন ট্রান্সফরমার ও বিভিন্ন মালামাল ভোলা বাংলাবাজার পল্লী বিদ্যুতের স্টোর থেকে উত্তোলন করেন।
সেগুলো লালমোহন ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পেশকার হাওলা এলাকায় (ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন) তার ভাড়া করা বাসায় রাখেন। সেখান থেকেই কৌশলে খুলনা নিয়ে যাওয়া হয় ৩১টি ট্রান্সফরমার। যদিও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লালমোহন নাগরিক সুরক্ষা কমিটির সভাপতি সোহেল আজিজ শাহিন বলেন, লালমোহন পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এই ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারে না।
তারা নিজেদের রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। থানা পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচন হবে। লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেস্টা চলছে। তদন্তের অংশ হিসেবে লালমোহন জোনাল অফিসকে পত্র দেওয়া হয়েছে, বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য।
লালমোহন জোনাল অফিসের ডিজিএম মাহমুদুল হাসান বলেন, উদ্ধার হওয়া ট্রান্সফরমারগুলো লালমোহন থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণে চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তে যারই সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ থাকবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.