নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পটুয়াখালীর গলাচিপায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হলেও অধিকাংশ ঘরেই এখন তালা ঝুলছে। বরাদ্দপ্রাপ্তদের অনেকেই ঘরে থাকছেন না, কেউ কেউ আবার অন্যের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। ফলে প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলো এই সরকারি উদ্যোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে—পাঁচ ধাপে উপকারভোগীদের মাঝে মোট ১ হাজার ৪০৪টি আশ্রয়ণ ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘরে দুটি কক্ষ, রান্নাঘর, শৌচাগার, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তবুও অধিকাংশ ঘর ফাঁকা পড়ে আছে। কোথাও বারান্দায় খড়ের স্তূপ, কোথাও আবার ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেক বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজস্ব জমি ও বাড়ির মালিক। কেউ কেউ শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন। এমনকি ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি চাকরিজীবীরাও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পকিয়া গ্রামের নাজমা বেগম বলেন, আমাদের এলাকায় আটটি ঘর হয়েছে, এর মধ্যে সাতটি খালি, শুধু আমি থাকি। চার বছরে ওই সাতটি ঘরে বরাদ্দ পাওয়া কেউ কোনোদিন আসেনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আসলে ঘরগুলোর বেশিরভাগই বেচাকেনা হয়ে গেছে। কেউ দুইটা, কেউ একটা কিনে রেখেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আমরা রাস্তায় থাকি আর গলাচিপা উপজেলা প্রশাসনের রাজস্ব খাতের দপ্তরি বাসন্তী রানী তিন লাখ টাকায় ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘর নিয়েছেন; কিন্তু তিনি কখনোই সেখানে থাকেননি। বাসন্তী রানী বলেন, আমি নিতে চাইনি। বোনের আইডি কার্ড খুঁজে পাইনি। তাই আমার আইডি কার্ড দিয়েছি।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। পরিত্যক্ত ঘরগুলো সামাজিক অপরাধের ঝুঁকির জায়গা হয়ে উঠতে পারে। আমরা সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব। স্থানীয় ভূমিহীনরা বলেন, যারা ঘর পেয়েও থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত অসহায় ও গৃহহীন পরিবারগুলোর নামে নতুন বরাদ্দ দিতে হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.