নিজস্ব প্রতিবেদক : সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় চার গুণ বেড়েছে। এর মধ্যে বরগুনা জেলার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখছে না স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশন এলাকা বাদে) ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪৫৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের। গত বছর একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৭২৯। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৩২ জন।
বরিশাল বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বরগুনা জেলার। গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আট হাজার ৩৬০ জন। মারা গেছেন ১৪ জন। এ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় আট গুণ বেশি।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘এ বছর বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। বৃষ্টিপাত বেশি হওয়া এবং মানুষের মাঝে সচেতনতা কম থাকায় অক্টোবরের মাঝামাঝিতেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে হলে সকলের সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।
বরগুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, ’সেপ্টেম্বরের শুরুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও শেষের দিকে আবারও তা বাড়তে শুরু করে। মনে হচ্ছিল, অক্টোবরে রোগীর সংখ্যা কমে যাবে, কিন্তু প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকছে। আমরা সরকারি, বেসরকারি সহযোগিতায় যে পরিমাণ স্যালাইন ও ওষুধ পেয়েছি তা দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে পেরেছি। তবে পরীক্ষার প্রয়োজনীয় সবকিছু পর্যাপ্ত থাকলেও সিবিসি পরীক্ষার যন্ত্রপাতির সংকট তৈরি হয়েছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার তাগিদ দিয়েছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য বরগুনায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নেওয়ায় দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। অথচ বরগুনার মানুষ এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
প্রসঙ্গ, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সিটি করপোরেশন এলাকা বাদে ঢাকা বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ২৯২ জন, মৃতের সংখ্যা ৩ জন। অন্যান্য বিভাগুলোর মধ্যে সিটি এলাকা বাদে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৯ হাজার ৪৭৩ জন, মৃতের সংখ্যা ২৫।
খুলনায় আাক্রান্ত ৩ হাজার ২৭১, মৃত্যু ৮ জনের। ময়মনসিংহে আক্রান্ত ১ হাজার ৯২৫ জন, মৃত্যু ১০ জনের। রাজশাহীতে আক্রান্ত ৩ হাজার ৯৯০ জন, মৃত্যু ১৩ জনের। এছাড়া রংপুরে ৬৮৪ ও সিলেটে ২০৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.