নিজস্ব প্রতিবেদক, মুলাদী : বরিশালের মুলাদীতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে লাশ দাফনের কাজ শুরু করেন স্বামী ও তাঁর লোকজন। কিন্তু মরদেহ গোসল করানোর সময় গলায় কালো দাগ দেখার বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ।
জানাজার সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত গৃহবধূ হলেন নাসরিন আক্তার (৩০)। তিনি পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামের দুলাল ব্যাপারীর স্ত্রী এবং উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের চরবাটামারা গ্রামের আবুল হোসেন ভূঁইয়ার মেয়ে।
পুলিশ জানায়, গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রথমে দাবি করেছেন, গতকাল রোববার রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে নাসরিন মারা গেছেন। পরে তাঁরা দাবি করেন, নাসরিন আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে নাসরিনের বাবা আবুল হোসেন ভূঁইয়ার দাবি, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে হৃদ্রোগে মৃত্যুর কথা বলে লাশ দাফনের চেষ্টা করছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মাহবুব হোসেন বরিশাল ক্রাইম ট্রেস ডটকম’কে জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামে গৃহবধূ নাসরিন আক্তারের লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু লাশ গোসলের সময় গলায় কালো দাগ দেখে স্থানীয় নারীদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানাজাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় নাসরিনের স্বামী কিংবা শ্বশুর কাউকে পাওয়া যায়নি।
নাসরিনের বাবা আবুল হোসেন ভূঁইয়া বরিশাল ক্রাইম ট্রেস ডটকম’কে জানান, গতকাল রাত ১২টার পরে নাসরিনের শ্বশুর কাসেম ব্যাপারী তাঁদের মোবাইল ফোনে জানান, নাসরিন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। রাতেই জামাতার বাড়ি গিয়ে মেয়ের লাশ দেখতে পান তিনি। আজ বেলা ১১টার দিকে জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। ১১টার দিকে পুলিশ পৌঁছালে নাসরিনের শাশুড়ি জানান, নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রাতে হৃদ্রোগের সংবাদ এবং পুলিশ দেখে আত্মহত্যার কথা বলায় সন্দেহ দেখা দেয় তাঁর। আবুল হোসেন ভূঁইয়ার দাবি, নাসরিনকে হত্যা করে ভিন্ন কথা বলে লাশ দাফনের চেষ্টা করা হয়েছিল।
নাসরিনের শাশুড়ি আমেনা বেগম বরিশাল ক্রাইম ট্রেস ডটকম’কে জানান, তাঁর ছেলে দুলালের সঙ্গে ঝগড়া করে রাতে নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। থানা-পুলিশের ঝামেলা এড়াতে বিষয়টি গোপন করে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কথা সবাইকে জানানো হয়েছিল।
এ ব্যাপারে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বরিশাল ক্রাইম ট্রেস ডটকম’কে বলেন, গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ গোপন করে লাশ দাফনের চেষ্টা করেছিলেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.