নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কমপ্লেক্স ভবন অপসারণ করে শুরু হয় মডেল মসজিদ নির্মাণের উন্নয়ন কাজ। তড়িঘড়ি করে বিক্রি করা হয় পুরনো স্থাপনা। ভরাট করা হয় শহরের একমাত্র স্বচ্ছ পানির জলাশয় বড় মসজিদের পুকুরটি। কেটে ফেলা হয় সবুজের সমারোহ নারিকেল গাছগুলো। ভেঙে ফেলা হয় নব-নির্মিত ৫ তলা ফাউন্ডেশনের দ্বিতল ভবনটি। সবার চোখে মডেল মসজিদের স্বপ্ন। পাইল বসানোর পরেই বন্ধ থাকে কাজ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমান কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বি-গ্রেডভুক্ত এ ক্যাটাগরির এ মসজিদটি সি-ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত হয়। এতে অনেকটা হতাশ মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও মুসল্লীরা।
পাইল বসানোর পরেই প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প বাস্তবায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। বিল না পেয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ বন্ধ করার পর কাজ চলমান রাখতে ২ দফা চিঠি দেয় জেলা গণপূর্ত অফিস। এর চেয়ে বেশী কিছু করার নেই তাদের বলে জানান তারা।
গণপূর্ত বিভাগ, পিরোজপুর জেলা অফিসের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোঃ সুলতান মাহমুদ শৈকত জানান, দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় সরকারী বরাদ্দকৃত ৫৬০টি মডেল মসজিদের মধ্যে মুজিব বর্ষে ১৭০ টি মসজিদের কাজ সম্পন্ন হবে। যে সকল ঠিকাদারগণ নিজেদের অর্থায়নে ২ তলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করেছেন প্রকল্প থেকে তাদের বিল ছাড় দেওয়া হয়েছে। যে সকল ঠিকাদারগন ঝুঁকি নেন নাই তাদের বিল ঝুলে আছে।এর মধ্যে কোন কোন ঠিকাদার কাজ ফেলে রেখেছেন।মঠবাড়িয়া মডেল মসজিদ তার মধ্যে একটি।
মসজিদটির কন্ট্রাক্ট নং পিআরজে/পিডব্লিউডি- ০৮/২০১৮-১৯।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান- মেসার্স খান বিল্ডার্স ও মেসার্স পলি ইন্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (জেভি) ঠিকানা- ২৬,আমতলা রোড,ঝালকাঠি। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ৮৪ লাখ ৮২ হাজার ২ শত ৪৬ টাকা ৯৮ পয়সা।এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার সাইনবোর্ড।ওয়ার্ক অর্ডার সম্বলিত এ সাইনবোর্ডটি টানানোর দায়িত্ব পায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। অদ্যবধি এখানে কোন সাইনবোর্ড টানানো হয়নি।
বড় উন্নয়ন কাজের ওয়ার্ক অর্ডার সাইনবোর্ড আকারে প্রদর্শনের নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত কেন প্রদর্শন করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে পিরোজপুর জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ডিডি একেএম সাদ উদ্দিন জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এটি বাস্তবায়নের জন্য বলা আছে। এর জন্য ফাউন্ডেশনে ১ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা আছে।সাইনবোর্ড টানানো হলেই জেলা গণপূর্ত বিভাগের ক্লিয়ারেন্স এর প্রেক্ষিতে বিল পরিশোধ করা হবে।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের টেলিফোন নাম্বারে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, মডেল মসজিদগুলোর প্রতি আমাদের তদারকি আছে। বরাদ্দ পেলে আবার কাজ শুরু হবে।