বরগুনা প্রতিনিধি// বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনার নদ-নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে জোয়ারে ভাসছে জেলার আট থেকে ১০ গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। ভোগান্তিতে রয়েছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা।
শনিবার সকাল থেকে জোয়ারের চাপ আরও বাড়ায় বরগুনার বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরিঘাট তলিয়ে গেছে। এতে সকাল থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে পাথরঘাটা, বামনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুরসহ খুলনার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ির চালকরা।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহবুবা সূখী বলেন, শনিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৭৩ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরকম আবহাওয়া আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে। সাগরে ৩ নম্বর ও নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জোয়ারের পানি এক থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।
তবে জেলার সব নদ-নদীতে পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
দুই দিন ধরে বিষখালী নদীতে পানি বাড়ছে। এক পর্যায়ে বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরিঘাট তলিয়ে যায়। ফেরিতে উঠতে যাত্রীদের নৌকা করে পার হতেও দেখা গেছে। এতে সকাল থেকে ফেরিঘাটে শত শত যাত্রীকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
টানা দুই দিন জোয়ারের চাপ না কমায় সদর উপজেলার পোটকাখালী, ঢলুয়া, বড়ইতলা, বাইনচটকি, কুমড়াখালী, খেজুরতলাসহ বিভিন্ন স্থানে বসতঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। সেইসঙ্গে রান্না বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা।
বড়ইতাল ফেরিঘাট সংলগ্ন ইউনুস শিকদার বলেন, “দুই দিন ধরে প্লাবিত হয়ে থাকলেও জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ-খবর নেননি। কোনো সহায়তাতো দূরে থাক এক প্যাকেট চিড়া বা মুড়ি নিয়েও আসেনি কেউ। জোয়ারের পানি না কমলে হয়ত না খেয়েই থাকতে হবে।”
পোটকাখালী আশ্রয়নে বসবাস করা মোসা. ফাতিমা বলেন, বাচ্চারা হাঁটাচলা করতে পারছে না। স্কুলে যেতে পারছে না। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। দুদিন ধরে রান্না হচ্ছে না।
“শুক্রবার পানি কমার পর কোনোরকম চুলায় আগুন দিয়েছিলাম। আজকে তো তাও পারব না, কারণ চুলার মধ্যে এখন অনেক পানি জমে আছে,” বলেন তিনি।
ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বলেন, এসব এলাকার জন্য জোয়ারে প্লাবিত হওয়া নিত্য দিনের বিষয়। তবে পানিবন্দির বিষয়ে তাকে কেউ জানায়নি।
বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসিন আরাফাত রানা বলেন, “পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর আমার জানা নেই। সবার সঙ্গে কথা বলেছি দেখি কি করা যায়।
“তবে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার মত কোনও ঝড়ের আভাস নেই। পানি কালকে থেকে আর বাড়বে না। তবে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে নেই।”
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের আট বিভাগেই আগামী দুই তিন দিন বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার কারণে উপকূলীয় ১৫ জেলার নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
শনিবার আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, “নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারতের বিহারে অবস্থান করছে। আগামী দুই-তিন বৃষ্টিপাত বেশি হতে পারে। এরপরও কম-বেশি বৃষ্টিপাত থাকবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.