ডেস্ক সংবাদ : পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) স্থাপিত ভূমিকম্প পরিমাপক সিসমোগ্রাফটি প্রায় ১৪ বছর ধরে বন্ধ। ২০১০ সালে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয়েছিল যন্ত্রটি। শুক্রবারের (২১ নভেম্বর) ভূমিকম্পে যখন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা দুলে ওঠে, তখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু প্রতীক্ষিত এই যন্ত্রের পর্দায় কোনো নড়াচড়া ধরা পড়েনি।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
এই ঘটনায় দেয়ালচাপা পড়ে তিনজনের মৃত্যুর খবর ইতিমধ্যেই মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে। আরো অনেক ভবন হেলে পড়েছে। কিন্তু নিয়মিত মনিটরিং থাকলে আগাম সংকেত দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞদের এমন মতই এখন আরো জোরালো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যন্ত্রটির একটি প্লেট মাটির নিচে বসানো থাকে। ওই প্লেট ভূমির অবস্থান উপরে উঠছে না নিচে নামছে, তা বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিজস্ব বা সরকারি অর্থে এত ব্যয়বহুল যন্ত্র নতুন করে স্থাপন সম্ভব নয়। তবে বিদেশি উন্নয়ন সংস্থার সহায়তা পেলে আগাম সতর্কসংকেত দিতে সক্ষম আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন করা কঠিন নয়।
পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, যন্ত্রটি শুধু পুরনো নয়, এটি অ্যানালগ।
বিশ্বজুড়ে এখন ভূমিকম্প নিরীক্ষণে আরো উন্নত যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্যাম্পাসে থাকা যন্ত্রটির কার্যকারিতা আদৌ আছে কি না, তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। ভূমিকম্প গবেষণায় জাপানের মতো মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিম গড়ে অত্যাধুনিক যন্ত্র স্থাপন করা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে পবিপ্রবিতে বসানো হয়েছিল সিসমোগ্রাফটি। কিন্তু ২০১১ সালের জানুয়ারিতেই ত্রুটি দেখা দেয়।
পরে একাডেমিক ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ড চেম্বারে পূর্ণাঙ্গ ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে আবার চালু করা হয়। বছর ঘুরতেই আবার বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে দীর্ঘ ১৪ বছর যন্ত্রটি অচল।
পবিপ্রবির এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আমিন জানান, যন্ত্রটির তত্ত্বাবধানে ছিল তিনটি বিভাগ-ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, জিও ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড আর্থ অবজারভেশন এবং এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং। তারাই সমন্বয়ের মাধ্যমে বিষয়টি দেখভাল করছেন।
এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন হোসেন বলেন, প্রকল্পের অধীনে যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়েছিল। শুরু থেকেই সচল রাখা যাচ্ছিল না। পরে পুরোপুরি অচল হয়ে যায়। প্রকল্পের সময়ে রক্ষণাবেক্ষণের মতো কোনো বরাদ্দ ছিল না। নতুন প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম তাওহিদুল ইসলাম বলেন, ভূমিকম্পের সময় প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও সারফেস এই তিন ধরনের তরঙ্গ তৈরি হয়। সারফেস ওয়েভে থাকে মূল শক্তি, তবে প্রাইমারি ওয়েভই আগে পৌঁছে যায় ভূপৃষ্ঠে। অত্যাধুনিক সেন্সর থাকলে এই প্রাথমিক সংকেত শনাক্ত করে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া সম্ভব।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.