ইসলাম ডেস্ক : জিকির আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। জিকিরের মাধ্যমেই মানুষের অন্তর পরিশুদ্ধ হয়। শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে মুক্তি পায় মানুষ। আল্লাহর দরবারে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আর জিকির বা আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জন্য আল্লাহওয়ালা ব্যক্তিরা সব সময় জিকিরে মশগুল থাকেন। কারণ আল্লাহওয়ালা ব্যক্তি যখনই জিকির থেকে গাফেল বা বেখেয়ালি হয় তখনই শয়তান তার কাঁধে চড়ে বসে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ইরশাদ করেন-
وَ مَنۡ یَّعۡشُ عَنۡ ذِکۡرِ الرَّحۡمٰنِ نُقَیِّضۡ لَهٗ شَیۡطٰنًا فَهُوَ لَهٗ قَرِیۡنٌ وَ اِنَّهُمۡ لَیَصُدُّوۡنَهُمۡ عَنِ السَّبِیۡلِ وَ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّهُمۡ مُّهۡتَدُوۡنَ
‘যে ব্যক্তি পরম দয়াময় আল্লাহর স্মরণে উদাসীন হয়; তিনি তাঁর জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করেন; এরপর সে হয় তাঁর সহচর। শয়তানরাই মানুষকে সৎ পথ থেকে বিরত রাখে। আর মানুষ মনে করে তারা সঠিক পথে আছে। (সুরা যুখরুফ : আয়াত ৩৬ ও ৩৭)
শয়তানের এ আক্রমণ থেকে মুমিন মুসলমানের বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ তাআলা কুরআনের অনেক জায়গায় নসিহত পেশ করেছেন। শয়তানের অবিরাম গোমরাহীর প্রচেষ্টার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন এবং সব জানেন। নিশ্চয় যারা সাবধান হয়, যখন শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দেয়, তখন তারা আত্মসচেতন হয় এবং তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়। আর যারা শয়তানের ভাই, শয়তানেরা তাদেরকে ভ্রান্তির দিকে টেনে নেয় এবং এ বিষয়ে তারা কোনো ত্রুটি করে না।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২০০-২০২)
এ কারণেই আল্লাহ তাআলা মানুষকে বসে-দাঁড়িয়ে-শুয়ে তথা জীবনে প্রতিটি কাজে বেশি বেশি তাঁর জিকির তথা স্মরণের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহর এ জিকির বা স্মরণের ফলে মানুষ প্রথমত শয়তানের গোমরাহী থেকে মুক্তি পায়। জিকিরের মাধ্যমেই বান্দা জাহান্নামের কঠিন আগুন থেকে মুক্তি পাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
الَّذِیۡنَ یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِهِمۡ وَ یَتَفَکَّرُوۡنَ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ هٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبۡحٰنَکَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
‘যারা দাঁড়িয়ে বসে এবং শুয়ে আল্লাহর (জিকির) স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে এবং (বলে) হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এ সব নিরর্থক সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র। তুমি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯১)
শয়তানের আক্রমণ ও ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকতে আল্লাহর স্মরণে বিকল্প নেই। তাছাড়া আল্লাহর স্মরণেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে আপন করে নিয়ে ঘোষণা দেন-
فَاذۡکُرُوۡنِیۡۤ اَذۡکُرۡکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لِیۡ وَ لَا تَکۡفُرُوۡنِ
‘অতএব তোমরা আমাকে স্মরণ কর; আমিও তোমাদের স্মরণ করব। তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও; মুখ ফিরিয়ে নিও না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫২)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে মুক্ত থাকতে জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর জিকির তথা স্মরণ করার তাওফিক দান করুন। জিকির তথা তাঁর স্মরণের মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :