নলছিটিতে দুই সাংবাদিক, পৌর কাউন্সিলরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটালে মামলা


Barisal Crime Trace -FF প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২২, ২০২৩, ৭:২৮ অপরাহ্ণ /
নলছিটিতে দুই সাংবাদিক, পৌর কাউন্সিলরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটালে মামলা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার রায়হান ফেরদৌসসহ দুই সাংবাদিক এবং ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার কাউন্সিলর মো. শহিদুল ইসলাম টিটুসহ চারজনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি নলছিটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ আব্দুল্লাহ আল মামুন লাভলু বাদী হয়ে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নলছিটি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের এই নির্দেশনা থানায় এসে পৌঁছলে বিষয়টি জানা যায়। মামলার আদেশে নলছিটি থানায় আসার পর তদন্তকাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি মো. আতাউর রহমান।

জানা গেছে, যমুনা টেলিভিশনের ৩৬০ ডিগ্রি নামের একটি অনুষ্ঠানে নলছিটি পৌরসভার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে প্রতিবেদন করে এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় মামলায়। এ ছাড়া নলছিটির এক স্থানীয় সাংবাদিক ফেসবুকে পৌরসভার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেন অভিযোগ এনে তাকেও আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে পৌরসভার বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য উপস্থাপন ও ফেসবুকে ছড়ানো মিথ্যা তথ্যপূর্ণ স্ট্যাটাসে কমেন্ট করায় আসামি করা হয় পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শহিদুল ইসলাম টিটু ও পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নজরুল ইসলামকে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে নলছিটি পৌরসভার দুই কোটি টাকা বরাদ্দের আওতায় ৫০টি গভীর নলকূপ ও ১১৯টি সৌর সড়কবাতি স্থাপন কাজের বিপরীতে ইজিপি টেন্ডারের মাধ্যমে মেসার্স ফরিদা এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়। প্রতি কিস্তিতে ৫০ লাখ টাকা করে এ কাজটি চার কিস্তিতে বরাদ্দ অনুযায়ী ১২টি নলকূপ ও ৩০টি সৌর সড়কবাতি স্থাপন করার কথা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ লাখ টাকা করে দুই কিস্তিতে এক কোটি টাকা পাওয়া যায়। এ টাকা দিয়ে ৪৮টি নলকূপ ও ৬০টি সৌর সড়কবাতি বসানো হয়। পরবর্তী সময়ে এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এ প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কোনোভাবেই চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হয়নি।

অথচ যমুনা টেলিভিশনের ৩৬০ ডিগ্রি অনুষ্ঠানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখানো হয়েছে সুগন্ধা এন্টারপ্রাইজের নাম, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মেসার্স ফরিদা এন্টারপ্রাইজ। এখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা অফিসের কোনো ব্যক্তির দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। কতিপয় জামায়াত-শিবির চক্র নলছিটি পৌরসভার উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে এবং পৌরবাসীকে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যা এ সংবাদ প্রকাশ করেছে। এতে নলছিটি পৌরসভা ও পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহেদ খানের সম্মানহানি করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। আসামিরা টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর স্ট্যাটাস ও কমেন্ট করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ করে বলেও জানানো হয় মামলার এজাহারে।

এ ব্যাপারে মামলার আসামি নলছিটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যমুনা টিভিতে যা দেখানো হয়েছে, সে অনুযায়ী আমাদের কাছে সব তথ্য রয়েছে।

নলছিটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ ও মামলার বাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন লাভলু বলেন, মামলার আসামিরা মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন। এতে তাদের সহযোগিতা করেছেন যারা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এগুলো ছড়িয়ে দিয়ে পৌরসভার মানহানি করেছে।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ইতিমধ্যেই তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। আমরা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিবেদন দাখিল করব।