শামীম আহমেদ, বরিশাল : বরিশালের গৌরনদী উপজেলার আধুনা গ্রামের বৃদ্ধা শুকুরন বেগম হত্যা মামলার বাদীর সাথে একাধিক আসামীদের আপষ হওয়ায় মায়ের খুনিদের বিচার না হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন খুন হওয়া বৃদ্ধার একমাত্র ছেলে লিটন তালুকদার। এমনকি মায়ের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করার পর তাকে (লিটন) গ্রাম ছাড়তে হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খুন হওয়া বৃদ্ধার একমাত্র ছেলে লিটন তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে পার্শ্ববর্তী রিনা বেগমের সাথে কথা কাটাকাটির জেরধরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আমার মা শুকুরন বেগমকে (৫৫) প্রকাশ্যে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে ভাড়াটিয়া রিনা বেগমের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। মাকে হত্যার ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বয়াতী বাদী হয়ে পরেরদিন গৌরনদী মডেল থানায় তরিগড়ি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যে মামলায় গৌরনদী পৌরসভার আশোকাঠী এলাকার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নাসির কাজী, জিয়া হাওলাদার, চন্দ্রহার গ্রামের রিয়াজ সরদার, ডায়মন্ড, সম্রাট সরদার, মারুফ, সাব্বির সরদার, রাব্বী, বাটাজোর এলাকার নয়ন, সিয়াম, বংকুড়া গ্রামের রিনা বেগম, তার ছেলে মারজান বেপারীসহ ১৫ জনকে নামধারী ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়।
লিটন আরও বলেন, মামলা দায়েরের পর আমি জানতে পারি ঘটনাস্থলে না থাকলেও শত্রুতামূলকভাবে এজাহারে আমার শ্বশুর বংকুড়া গ্রামের বাসিন্দা তৈয়ব আলী বেপারী ও আমার শ্যালক জুয়েল বেপারীকেও আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িত আরও কয়েকজনকে বাদ দেওয়া হয় এবং আমাকে মামলার সাক্ষীও রাখা হয়নি।
এ নিয়ে মামলার বাদী আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বেপারীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। ইতিমধ্যে মামলার বাদী মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসামী জিয়া হাওলাদার, ডায়মন্ড সহ আরও কয়েকজন আসামীর নাম কর্তন করেছে বলে জানতে পেরেছি। এ নিয়ে গত ২৭ মার্চ মায়ের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে আমি সংবাদ সম্মেলন করি।
অভিযোগ করে তিনি (লিটন) বলেন, সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি বাদী আবু হানিফ ও আসামী পক্ষের লোকজন জানতে পেরে আমাকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি শুরু করে। সর্বশেষ ঈদের দিন সকালে বাদী ও আসামী পক্ষের লোকজন মিলে আমাকে মারধর করে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিয়েছে। অন্যাথায় মায়ের মত আমারও একই অবস্থা হবে বলে জানিয়েছে। এমনকি আসামী পক্ষের নাসির সরদার নামের এক লোক দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এই হত্যা মামলা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে আমাকে হুমকি প্রদান অব্যাহত রেখেছে। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। মায়ের হত্যার প্রকৃত আসামীদের বিচার চেয়ে তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী আবু হানিফের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন বলেন, আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে এক মাসের আগাম জামিনে আছে। তিনি আরও বলেন, নিহত বৃদ্ধার ছেলেকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানা নেই। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :