মুলাদী প্রতিনিধি : বরিশালের মুলাদীর গ্রামীণ পথগুলো সেজে আছে জারুল ফুলে। পথ চলতে গেলেই নজর কেড়ে নিবে দুই পাশে ফোঁটা থোকা থোকা ফুল। জারুল ফুলের সৌন্দর্যে পথচারীদের মন প্রাণবন্ত হয়ে যায়। তাই বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সামনের সড়কগুলোতে লাগানো হয় জারুল গাছ। ফুলগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এ গাছ দিয়ে তৈরি করা হয় নানা ধরনের আসবাবপত্র। তবে এই গাছগুলো ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
মুলাদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মোমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে জারুলের তিনটি প্রজাতি আছে। এগুলো হলো জারুল, বিলেতি জারুল ও ছোট জারুল। নীলাভ ও গোলাপি দু’রঙের জারুল ফুল বাংলাদেশে থাকলেও বেশিরভাগ জায়গায় নীল রঙের ফুলের গাছটিই দেখতে পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।
বৃক্ষ জাতীয় জারুল ফুলের আদি নিবাস শ্রীলঙ্কা হলেও বাংলাদেশে এ গাছটি এসেছে ভারত থেকে। পাতাঝরা বৃক্ষটি শীতকালে পত্রশূন্য থাকে। বসন্তে নতুন গাঢ় সবুজ পাতা গজায়। গাছ সাধারণত ১০ থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়।
গাছের পাতা সবুজ এবং পুরু ও বেশ প্রশস্ত ধরনের। গাছের শাখা-প্রশাখা ও কাণ্ড শক্ত। শাখা প্রশাখার অগ্রভাগে দণ্ড বোঁটায় অসংখ্য ফুল ফোটে। বোঁটার নিচ থেকে প্রথম ফুল ফোটা শুরু হয়ে বোঁটার সামনের দিকে ধীরে ধীরে ফুল ফোটে।
এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত ফুল আসে। ফুল ঝরে পরার পর ফল পরিপক্ক হতে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগে। গাছ ফুলে ছেঁয়ে গেলেও চারপাশে তেমন সুগন্ধি ছড়ায় না। তবে এর দৃষ্টিনন্দন রঙ ও রূপের শোভায় সবারই চোখ আটকে যায়। এর পাপড়ির নমনীয়তা ও কোমলতা হৃদয় ছুঁয়ে যায় প্রকৃতিপ্রেমীদের।
ফুল পাঁচ থেকে সাত সেন্টিমিটার চওড়া হয় এবং হালকা সোনালি পুংকেশর থাকে। ফল ডিম্বাকার, শক্ত ও বিদারি। বীজ এক সেন্টিমিটার চওড়া, পাতলা বাদামি রঙ্গের। বীজে থেকেই এর বংশবৃদ্ধি হয়।
জারুল গাছ থেকে কাঠ করতে চাইলে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ বছর সময় লাগে। এর কাঠের রঙ লালচে ধরনের। কাঠগুলো বেশ শক্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী। জমি চাষের লাঙল, ঘর, নৌকা ও আসবাবপত্র তৈরিতে এই কাঠ ব্যবহার করা যায়।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :