এইচ আর হীরা ॥ দীর্ঘ দেড় যুগের বেশি সময় পার হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কার না হওয়ায় বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকার ২২নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সড়কটি এখন ওই এলাকার মানুষের কাছে মরণফাঁদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রায়ই দুর্ঘটনার কারণে এই সড়কে চলাচলরত যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। আহত হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।
একটু বৃষ্টিতেই সড়কের অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি কাদামাটি জমে যান চলাচল ব্যাহত হয়। এতে মাঝে মধ্যে অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেল উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির নথুল্লাবাদ ব্রিজ থেকে জিয়া সড়ক প্রথম গলি এবং লোহার পোল পর্যন্ত সড়কের প্রায় দেড় এক কিলোমিটার রাস্তার অধিকাংশ স্থানের কার্পেটিং এবং খোয়া উঠে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে।সংযোগ সড়কটি দিয়ে শতশত যানবাহন এবং স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়,সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ হাজার হাজার মানুষ চরম ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে চলাচল করছে।
২২নং ওয়ার্ডের প্রায় ১২হাজার ভোটারের নথুল্লাবাদ তথা শহরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। জানা যায়, ২০০৩ সালের সিটি নির্বাচনে ২২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন প্রায়ত এ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান আতিক। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরে সড়কটি পাকা সড়কে রাপান্তরিত হয়। এরপর আর এই সড়কে গত তিন মেয়াদে জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হলেও এই সড়কটি সংস্কার বা মেরামত করেনি কোন কাউন্সিলর।
আর এতে করে গত ২০ বছরের নির্মাণ করা সড়কটি এখন স্থানীয়দের জন্য দুর্ভগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন মো: আনিচুর রহমান দুলাল।নির্বাচনের পূর্বে তিনি বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও ওয়ার্ডের জন্য গত পাঁচ বছরে কোন কাজ করতে পারেননি তিনি। ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে দোষারোপ করে বলেন,
আমরা এমন এক মেয়রের অধীনে কাউন্সিলর ছিলাম যার কারনে কোন উন্নয়ন মূলক কাজ কার সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র বরিশাল সিটি কর্পোরেশন যেখানে এই মেয়রের আমলে কোন বরাদ্দ আসেনি। নগরীতে যে কাজ হয়েছে মেয়র তার নিজের মত করে নির্ধারিত ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করিয়েছেন। আর এ কারনেই আমি এলাকার কোন উন্নয়ন করতে পারিনি। তিনি আরও বলেন,আমি আশা করি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত এর মাধ্যমে আমরা আমরা অনেক বরাদ্দ পাবো।
আর বরাদ্দ পেলে ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট,ড্রেনেজসহ যেসকল সমস্যা রয়েছে সেগুলো অবশ্যই এবার সমাধান হবে। স্থানীয় বাসিন্দা আজম খান জানান, এই সড়কটিতে প্রায়ই ইজিবাইক, মটরসাইকেল, বাইসাইকেল, ভ্যান-রিক্সাসহ ছোট যানবাহনগুলো উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেন,গত ১৫ বছরে ওয়ার্ডে কোন উন্নয়ন মূলক কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এলাকার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ।
একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যার কারনে রাস্তায় চলাচলে জীবনের ঝুঁকি থাকে। মামুন হাওলাদার নামের এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের ওয়ার্ডের সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। শুনেছি বর্তমান কাউন্সিলর বরাদ্দ না পাওয়াতে কোনো কাজ করতে পারেনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সহ সভাপতি মো: ফাইজুল ইসলাম সজিব তিনিও এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, সর্বপ্রথম ২২নং ওয়ার্ডের ড্রেনেজ সমস্যা সমাধানে কাজ করা অতীব জরুরি। এছাড়াও এলাকায় বাচ্চাদের খেলার কোন মাঠ নেই। আমি ওয়ার্ডের একজন ভোটার হিসেবে আশা করি বর্তমান কাউন্সিলর এ নিয়ে দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি অবশ্যই এবার তার ওয়ার্ডের উন্নয়ন মূলক কাজ করে আমাদের পাশে দাড়াবেন।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :