নাজিরপুরের নৌকার হাট ক্রেতাশূন্য


Barisal Crime Trace -FF প্রকাশের সময় : জুলাই ১১, ২০২৩, ৮:৩২ অপরাহ্ণ /
নাজিরপুরের নৌকার হাট ক্রেতাশূন্য

নাজিরপুর প্রতিনিধি : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা বাজারের নৌকার হাটে নানা আকারের নৌকা থাকলেও নেই ক্রেতাদের ভিড়। এবার খাল-বিলে পানি না বাড়ায় নৌকার চাহিদা বাড়েনি বলে জানিয়েছেন নৌকার কারিগররা।

প্রতি শনি ও মঙ্গলবার উপজেলার বেলুয়া নদীতে ও নদীর তীরে রাস্তায় বসে অর্ধশত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই নৌকার হাট। সকাল থেকে শুরু করে নৌকা বেচা-কেনা চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। এছাড়া প্রতিদিনই সেখানে নৌকা বেচা-কেনা হয়। নাজিরপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা স্বরুপকাঠী, কাউখালী, গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া, বাগেরহাট জেলার চিতলমারীসহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষ নৌকা বেচা-কেনা করতে আসেন এ হাটে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতাই বেশি। বেচা-কেনা কম হলেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নৌকার হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক।

নৌকার কারিগর চান্দুমিয়া বলেন, এ হাটে মূলত ডিঙি নৌকার বেচা-কেনা বেশি হয়। আকারভেদে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত একেকটি ডিঙি নৌকা বিক্রি হয়। আমি যে নৌকাটি নিয়ে আসছি সেটা আমার তৈরি করতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করব। সাধারণত মেহগনি, কড়ই, আম, চাম্বল, রেইনট্রি, কড়ই গাছের কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করা হয়। এখানে বিল অঞ্চল হওয়ায় নৌকা বিক্রি সারাবছরই চলে।

একই এলাকার পাইকারী ক্রেতা আইয়ুব আলী বলেন, আমি এই হাটে আসা কারিগরদের কাছ থেকে নৌকা পাইকারী কিনে এই হাটে আবার খুচরা বিক্রি করি। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় আর ভাসমান সবজি চাষে নৌকার ব্যবহার বেশি তাই সারাবছর কম বেশি বিক্রি হয়। তবে এ বছর খাল-বিলে পানি না বাড়ায় নৌকার চাহিদা তেমন একটা বাড়েনি। সকালে আসছি, এখনো একটি নৌকাও বিক্রি করতে পারি নাই।

অন্য এক কারিগর অমল ব্যাপারী জানান, কোনো কোনো হাটে নৌকা বিক্রি না করে বাড়ি যেতে হচ্ছে। এমনিতেই কাঠ থেকে শুরু করে নৌকা তৈরিতে যা যা দরকার সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে, তার ওপরে নৌকার দাম কম। আমরা খুব কষ্টে আছি।’

নৌকা কিনতে আসা ছলেমান শেখ বলেন, তুলনামূলকভাবে নৌকার দাম কম। চার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় অনেক ভালো নৌকা পাওয়া যায়। একটু কম দামেই কিনলাম।

বৈঠাকাটা ভাসমান বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা জানান, ভাসমান এ বাজারে ৫০ বছর আগে থেকে নৌকা বিক্রি করা হয়। তবে বাজারটি ভাসমান সবজি বাজার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাজারে খাজনার পরিমাণ খুবই কম তাই ক্রেতা-বিক্রেতা বেচাকেনা করে সন্তুষ্ট। নাজিরপুর টু বৈটাকাঠা বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কর করা হলে ক্রেতা আরো বাড়বে।