বরিশালে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড!


Mahadi Hasan প্রকাশের সময় : জুলাই ১৪, ২০২৩, ১:৫০ অপরাহ্ণ /
বরিশালে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ব্যাক ডেট অর্থাৎ পেছনের তারিখ দেখিয়ে বরিশাল মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে সদ্য বিলুপ্তকৃত মহানগর ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে।

বুধবার রাত থেকে হঠ্যাৎ করে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আওতাধীন বিভিন্ন ওয়ার্ড ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটির আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ বিভিন্ন পদ প্রাপ্তির দাবি করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয় সাদিক আব্দুল্লাহ অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আর ফেসবুকে এসব পোষ্ট দেয়ার পরপরই বিভিন্ন ইউনিটের পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও (প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও মেরর খোকন সেরনিয়াবাত অনুসারী) পাল্টা-পাল্টি পোষ্ট দিতে শুরু করেন।

যা একপর্যায়ে ঘটে তুলকালাম কাণ্ড! এসব নিয়ে হাসিঠাট্টা করে একের পর এক ফেসবুকে পোস্ট দিতেও দেখা গেছে বরিশালের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে। একাধিক সূত্রে জানা যায়, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচার প্রচারণার সময় নৌকার কর্মীকে মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার হয় তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না।

এর পরপরই মহানগর ছাত্রলীগের ওই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র। নির্বাচন শেষে রইজ আহম্মেদ মান্না কারামুক্ত হয়। তিন মাস মেয়াদের আহবায়ক কমিটি গত বছরের ২৩ জুলাই গঠিত হলেও কোনো ইউনিট কমিটি গঠন করতে পারেনি তারা। কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর এখন পেছনের তারিখে কলেজ ও ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করছেন মান্না।

মহানগর ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা আবিদ হাসান রানা বলেন, এটা অবৈধ। ব্যাক ডেট দিয়ে কমিটি করার পায়তারা নির্বাচনের পর থেকেই চলছে। তারা সময় সুযোগ পাচ্ছে না।

শুনেছি খুব দ্রুত নাকি অবাস্তব এসব কমিটি ঘোষণা করবে মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক বিতর্কিত কমিটি। এই ধরণের পাঁয়তারা তারা করতে পারে যাদের মধ্যে ছাত্ররাজনীতির জ্ঞান নেই।

বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য অসীম দেওয়ান বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই নগরীতে গুঞ্জন চলছে মহানগর ছাত্রলীগের অধীনস্থ ইউনিটগুলোর কমিটি গঠন করা হবে। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে মহানগর ছাত্রলীগেরই তো কমিটি নেই।

যে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে সেই কমিটি কিভাবে ইউনিট কমিটি গঠন করে। তারা খুব তোড়জোর করছে পেছনের তারিখ দিয়ে কমিটিগুলো ঘোষণা করার। এটা যদি হয়েই যায় তাহলে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে হেয় করবে তারা।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও ছাত্র সংসদের ভিপি মঈন তুষার বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তো বিধি বিধান রয়েছে। যাদের ছাত্রলীগ থেকে বিতারিত করেছে তারা আবার ছাত্রলীগের কমিটি করে কিভাবে। আমাদের কাছে খবর রয়েছে অবৈধভাবে কমিটিগুলো ঘোষণা করে প্রকাশ্যে আনা হবে।

ছাত্রলীগের ইজ্জ্বত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এসব লোকগুলো এবং এদের পেছনে যারা রয়েছে তাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার করলে কলঙ্কমুক্ত হবে আমাদের প্রাণের সংগঠন।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাবেক আহবায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নার মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেনি। তবে ওই কমিটির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মাইনুল হাসান বলেন, এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান জানান, আসলে এভাবে কমিটি গঠন করাটা অসম্ভব। বাংলাদেশে ছাত্রলীগের এমন কোনো নজির নেই যে বিলুপ্ত হওয়া কমিটি ব্যাক ডেট দিয়ে তাদের অন্তর্ভূক্ত কমিটি ঘোষণা করে। এরকমটা যদি বরিশালে হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে যাদের জড়িত পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।