বেতাগীর সড়ক এখন কৃষকের চাতাল!


Barisal Crime Trace -FF প্রকাশের সময় : আগস্ট ২৪, ২০২৩, ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ /
বেতাগীর সড়ক এখন কৃষকের চাতাল!

বেতাগী প্রতিনিধি : বরগুনা-বেতাগী-বাকেরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ওপর দুপাশে ধানের খড় স্তুপ করে রাখা হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এসব সড়ক দখল করে স্থানীয় কৃষকেরা চলতি বোরো ও আউশ মৌসুমে ফসলের ধানের খড় শুকানোর কাজ শেষে সড়কের ওপরে দুপাশে সারি সারি করে খড়ের স্তুপ করে রাখায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন হাজারো যানবাহন। জেলার বিভিন্ন স্থানে এরকম কমবেশি থাকলেও বেতাগী উপজেলায় প্রায় ২২ কিলোমিটার সড়কের রাস্তার পাশে খড় স্তুপ করে রাখা হয়েছে।

সড়কে চলাচলের সঠিক আইন থাকলেও তার সঠিকভাবে ব্যবহার করছে না এসব কৃষকরা। তাদের সড়কের আইন সম্পর্কে সচেতন করতে স্থানীয় প্রশাসনকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতেও দেখা যায়নি। এ কারণে সড়কের আইনের সুফল নীরবেই থেকে যাচ্ছে। এতে দুর্ভোগের পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনা।

বেতাগী পৌর শহর এলাকা পার হয়ে উত্তর বেতাগী থেকে নিয়ামতি পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার, মোকামিয়া থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের দুপাশে সারিবদ্ধভাবে খড়ের স্তুপ রয়েছে।

এলাকার কৃষকেরা ক্ষেত থেকে ধান কেটে এনে সড়কের ওপর দখল করে প্রতিবছর বোরো ও আউশ ধান মাড়াই, ধান পরিষ্কার, ধান ও খড় শুকানো কাজ করেন। খড় শুকানোর কাজ শেষে তারা খড়গুলো বাড়িতে না নিয়ে সড়কের প্রায় অর্ধেক অংশ দখল করে সারি সারি স্তুপ করে রেখেছে। এর ফলে সড়ক অনেকটা সরু হয়ে গিয়েছে।

উপজেলার মোকামিয়া গ্রামের কৃষক রতন হাওলাদার বলেন, এ মৌসুমে সড়কের ওপর দীর্ঘদিন যাবৎ সারি সারি করে খড়ের স্তুপ রাখার ফলে সড়ক সরু হয়ে গেছে। এতে মোটরসাইকেল চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে।

পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঢালীকান্দা গ্রামের মোটরবাইক চালক রাজু আহমেদ বলেন, বাড়ি থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে সড়কের ওপর খড়ের স্তুপের কারণে আমি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলাম।

অটোভ্যানের চালক সেলিম হোসেন বলেন, সড়কের ওপর শুকনো খড় স্তুপ করে রাখার কারণে একটি অটোরিকশা নছিমনকে সাইড দিতে দেরি করায় নছিমনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খড়ের স্তুপের মধ্যে ঢুকে য়ায়।

বেতাগী পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কামাল হোসেন খান বলেন, সড়কে থাকা শুকনো খড় বাতাসে উড়ে এসে পথচারীদের চোখে-মুখে ও নাকে পড়ছে। তাছাড়া সড়কের ওপর অনেক খড় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এর ফলে একটু বৃষ্টি হলেই খড় ভিজে পচে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়।

কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘন ঘন বৃষ্টি হচ্ছে। খড় রাখার জন্য আঙিনা নেই। অনেক বছর থেকে সড়কের ধারে খড় রাখছি। এই কাজের জন্য যদি কোনো অন্যায় হয় তাহলে আমার করার কিছুই নেই। আর যদি কেউ এই ধরনের কাজ না করে, আমিও করব না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইছা বলেন, আমি দেখেছি অন্যান্য উপজেলায় কৃষকদের উঠান আছে। এই উপজেলায় কৃষকদের কৃষিকাজের জন্য উঠান অনেক কম। উঠান কম থাকায় সড়কের ওপরে এই ধরনের কাজ করছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী মো. ফারুক আহমেদ বলেন, উপজেলার প্রতিটি সড়ক জনসাধারণের চলাচলের জন্য। অন্য কোনো কাজের জন্য নয়। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। আর সড়কের ওপর এ ধরনের কর্মকাণ্ড করা সম্পূর্ণ বেআইনি।