বাউফলে আবারও ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু! মৃত নারীকে বরিশাল পাঠানোর অভিযোগ!


Barisal Crime Trace -FF প্রকাশের সময় : আগস্ট ২৭, ২০২৩, ৮:২৫ অপরাহ্ণ /
বাউফলে আবারও ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু! মৃত নারীকে বরিশাল পাঠানোর অভিযোগ!

মো. আরিফুল ইসলাম, বাউফল : পটুয়াখালীর বাউফলে আবারও ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যু ঘটেছে। মৃত নারীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার কালিশুরী বাজারের মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত ওই প্রসূতির নাম মো. মোসা. লিমা আক্তার (২২)। সে উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠি গ্রামের মো. আইয়ুব আলী শেখের মেয়ে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে পার্শ্ববর্তী বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের মো. কামাল হোসেনের সাথে বিয়ে হয় লিমার। শনিবার সকালে লিমার প্রসব ব্যাথা শুরু হলে লিমার পরিবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করান। ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎিসক সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে বলে জানান।

নিদিষ্ট টাকা চুক্তিতে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লিমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিজারে কন্যা সন্তান জন্ম দেন লিমা। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও লিমার জ্ঞান ফেরেনি। অপারেশন থিয়েটারেই মৃত্যু হয় লিমার। স্বজনরা বিষয়টি টের পেলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় রোগী সুস্থ্য আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠাতে হবে।

ক্লিনিকের লোকজন তড়িঘড়ি করে লিমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়। লিমার স্বজনেরা বরিশাল না যেয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
এর আগে ২০২০ সালে ভুল চিকিৎসায় একই ক্লিনিকে হ্যাপী বেগম (২৪) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। পরে মোটা অংকের টাকার বিনিময় নিহতের পরিবারের সাথে সমঝোতা করে মাজেদা ক্লিনিকি কতৃপক্ষ।

লিমার খালা ঝাকিয়া বেগম বলেন, সামান্য ব্যাথা নিয়ে লিমাকে মাজেদা ক্লিনিকে ভর্তি করিয়েছি। ওরা সিজার অপারেশন করার পরে লিমার জ্ঞান না আসলে ডাক্তার বলে বরিশাল নিয়ে যেতে হবে। অক্সিজেন দিলে রোগী সুস্থ হয়ে যাবে। আমাদের সন্দেহ হওয়ায় আমরা বরিশাল না যেয়ে বাউফল হাসপাতালে নিয়ে আসছি।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. শোয়েব মাহমুদ গণমাধ্যমকে জানান, লিমাকে মৃত অবস্থায় এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আনুমানিক এক দেড় ঘন্টা আগেই মারা গেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, তদন্ত করে সত্য ঘটনা উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা অভিযুক্ত ক্লিনিকটি বন্ধের সুপারিশ করবো।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, মাজেদা ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করার সক্ষমতা আছে কিনা দেখতে হবে এবং যে ডাক্তার অপারেশন করেছেন তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।