# হাসনাত পুত্র আশিক আব্দুল্লাহও চান নৌকার টিকেট
ফাহিম ফিরোজ, বরিশাল ॥ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রাথীরা। সভা-সমাবেশ কিংবা মতবিনিময়ের মাধ্যমে প্রকাশ করছেন প্রার্থীতা। কেউবা আবার বিভিন্ন দিবসের পোস্টারে চাইছেন এলাকাবাসীর সমর্থন। এমনকি শোক দিবসের অনুষ্ঠানেও চাইছেন নৌকার পক্ষে ভোট। চলতি বছরের শেষের দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া কথা রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তোরজোড় শুরু করেছে। সন্ধ্যা নদীর তীরে বানারীপাড়া-উজিরপুর উপজেলা অবস্থিত। এ দুই উপজেলা নিয়ে বরিশাল-২ আসন গঠিত। শের-ই বাংলা একে ফজলুল হকের বীরভূমি এ অঞ্চলে অবস্থিত। এ আসনেই রয়েছেন গুঠিয়ার বায়তুল আমান জামে মসজিদ, শেরে-ই বাংলার মাজার। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২ হাজার ৫৭১ জন (আরও বাড়তে পারে)।
স্বাধীনতার পরে এ আসনটিতে আওয়ামীলীগ পাঁচবার, বিএনপি দুইবার, জাতীয় পার্টি তিনবার এবং ওয়াকর্স পার্টি একবার নির্বাচিত হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই আসনে আওয়ামীলীগ সবচেয়ে বেশি বিজয়ী হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অন্যতম নেতা নজরুল ইসলাম এ আসনের প্রথম সংসদস্য সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৯ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সৈয়দ আজিজুল হক নির্বাচিত হন।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে ওয়াকার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আসনটিকে প্রথম বারের মতো উদ্ধার করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। পরে একই বছর এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির গোলাম ফারুক অভি নির্বাচিত হন। মডেল তিন্নি হত্যায় ফেরার গোলাম ফারুক অভি। ২০০১ সালের নির্বাচনে আসনটিকে পুনরায় উদ্ধার করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এ সময় আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন আলাল। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনিরুল ইসলাম মনি এ আসনে নির্বাচিত হন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুস নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সরদার সরফুদ্দিন সান্টুকে পরাজিত করে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম তালুকদার নির্বাচিত হন।
এ নির্বাচনে শাহে আলম তালুকদার নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ লাখ ১২ হাজার ৩৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে সরদার সরফুদ্দিন সান্টু পেয়েছেন মাত্র ১১ হাজার ১৩৭ ভোট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- বর্তমান এমপি শাহে আলম, সাবেক এমপি তালুকদার মো. ইউনুস, সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনি, বানারীপাড়ার উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুর রহমান, ফাইয়াজুল হক রাজু, সংরক্ষিত আসনের এমপি রুবিনা আক্তার মীরা। মনোনয়ন চাইবেন বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছোট ছেলে আশিক আবদুল্লাহ। তিনি নৌকার টিকেট পেতে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের দাড়স্থ হচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। আশিক আব্দুল্লাহর অনুসারীদের দাবী মনোনয়ন পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তিনি।
বিএনপির একাধিক নেতা এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন-বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল (সাবেক এমপি)। তিনিই সর্বপ্রথম এ আসনটিকে বিরোধীদের হাত থেকে উদ্ধার করেন। এই আসনে দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। এছাড়া বিএনপির দলীয় মনোনয়ন চাইবেন, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দানবীর সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু, কেন্দ্রীয় বিএনপির অন্যতম নেতা কাজী রওনোকুল ইসলাম টিপু, ইলিয়াস খান এ আসনে থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী জাসদের (আম্বিয়া) আবুল কালাম আজাদ বাদল ও আনিচুজ্জামান এবং ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা নেছারউদ্দিন।
নির্বাচনের ব্যাপারে বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন বলেন, ‘আমরা এখন নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করি না। আমরা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম করছি। আমাদের দাবী না মানা পর্যন্ত কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন হলে প্রার্থী ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় বিএনপি।’
এদিকে সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা মাসব্যাপী শোক সভা সমাবেশ করেছে। অনেকেই জানান দিচ্ছে প্রার্থীতা। তবে সবার একই বক্তব্য নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :