বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি : বরিশালের বাকেরগঞ্জের কলসকাঠীর পাশে পান্ডব নদীর চরে অব্যাহতভাবে মাটি চুরি করছে ভূমিদস্যুরা। এতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশংকায় রয়েছে নদীর তীরের কয়েকটি গ্রামের মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে কলসকাঠী ইউনিয়নের পান্ডব নদীর তীরবর্তী দক্ষিণ সাদিশ, সাদিশ আমতলী, বাগদিয়া, নারায়ঙ্গল গ্রামে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস। কিন্তু অদৃশ্য কারনে প্রতিদিন কয়েকটি ভেকু ও বেশ কিছু শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে ২০-২৫ টি ট্রলারে নিয়ে যাচ্ছে অন্যত্র ফলে ভাঙনসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে নদীর তীরবর্তী মানুষ।
দক্ষিণ সাদিশ গ্রামের ভুক্তভোগী ইমতিয়াজ মাহমুদ সাদ্দাম বলেন, ‘কিছু ভূমিদস্যু দিনে-রাতে নদীর চর থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে, ফলে পান্ডবের ভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে।’
সাদিশ গ্রামের আরিফ হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের এলাকায় গত বছর একটি প্রাথমিক স্কুল ও মসজিদসহ গোরস্থান ও কয়েকটি বাড়ি পান্ডব নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে, এসব গ্রামের যা বাকি ছিল, তার মধ্যে মাটি চুরির ফলে প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে এই ভাঙন শুরু হয়ে চলমান রয়েছে।’
কলসকাঠীর মুজাফফর খান বলেন, ‘বিগত কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলের অনেক পরিবার পান্ডব নদীর তীব্র ভাঙনে সহায় সম্বলহীন হয়েছে, তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর মাটি চুরি কিংবা ভাঙন রোধে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’
৯০ নং দক্ষিণ সাদিশ সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক গাজী কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘মাটি চুরির ফলে ভাঙনে এ এলাকার একমাত্র প্রাথমিক স্কুল ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাই পাঠদানের জন্য একটু দূরে টিনসেট দিয়ে ৩ রুমবিশিষ্ট একটি ঘর করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করছি। কিন্তু নদী ভাঙন যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে পরবর্তীতে এই অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা কোথায় পড়াশুনা করতে যাবে, তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।’
দক্ষিণ সাদিশ গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার হাওলাদার বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট মাটি চুরি করে বিক্রি করে যাচ্ছে প্রতি নিয়ত,তাছাড়া এ নদীর ভাঙনে আমার প্রায় ৪ একরের বেশী জমি বিলীন হয়ে আজ আমি অসহায় হয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। প্রশাসনের এর একটা দৃষ্টান্তমূলক বিহিত করা উচিৎ।’
বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল চন্দ্র শীল বলেন, ‘পান্ডব নদীর ভাঙন কবলিত এলাকায় অবৈধভাবে মাটিকাটা রোধে কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে আর ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বরাদ্দ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বরিশাল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ আরশাদ আলীর সঙ্গে ইত্তেফাকের এই সংবাদদাতা এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। তবে এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেনের কথা বলেন। কিন্তু রাকিবকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :