ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নে অবস্থিত হাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক, নস্যপ্রহরী, আয়া ও কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন এর বিরুদ্ধে, পছন্দের চার প্রার্থীর মধ্যে তিন প্রার্থীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এজন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গোপন রেখেই শুধুমাত্র পছন্দের প্রার্থীকে পাঠানো হয় প্রবেশপত্র, চার প্রার্থীর মধ্যে প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন এর ছেলে পাপ্পু কে দুই মাস আগেই লোক চক্ষুর আড়ালে কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দেন তিনি। জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজন প্রীতি সহ নানান অভিযোগ এনে নিয়োগ স্থগিত ও বাতিল চেয়ে গত শনিবার (২৬ আগষ্ট) দুপুরে ভোলা জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসার এর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন আগে ভোলা সদর মাসুমা খানুম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষা গোপন রেখে নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে সমঝোতা করে স্বাক্ষর করে নেয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া গোপন রাখায় স্থানীয় কোন প্রার্থী অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন এর ছেলেসহ পছন্দের আরো ৩ প্রার্থীকে গোপনে নিয়োগ দেওয়া হয়।
লিখিত অভিযোগে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ভাগিনা মোঃ জিলন উল্লেখ করেন, আমাদের অজান্তেই প্রধান শিক্ষক মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। জিলন আরও বলেন আমার ছেলে ফরহাদ-কে নস্যপ্রহরী পদে নিয়োগের ব্যাপারে, প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন কাছে গেলে সে আমার কাছ থেকে চার লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু চার লাখ টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই বলে আমার ছেলের চাকরি দেয়নি এবং নিয়োগ পরীক্ষায়ও ডাকেনি। সে অত্যন্ত র্ধূত এবং চালাক প্রকৃতির মানুষ। পরে উক্ত বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি বাতিলসহ নিয়োগ বানিজ্য করার কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য আবেদন করেন তারা।
বিদ্যালয়ের নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক সহকারী শিক্ষক বলেন, অফিস সহায়ক পদে ৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করেছি। তারা অস্বীকার করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন ফোনে কল দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমি ফোনে কথা বলি না সরাসরি এসে কথা বলেন। সরাসরি গিয়ে জানতে চাইলে তিনি সমস্ত দোষ সভাপতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেন। তযথাযথ অনিয়মের মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষা শেষে উত্তীর্ণদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। অফিস সহায়ক পদে জামাতের শিবিরের সক্রিয় নেতা মোঃ বিল্লাল ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ছেলে পাপ্পু-কে, কম্পিউটার অপারেটর পদে আরজু আয়া পদে ও নস্যপ্রহরী পদে জাপর উত্তীর্ণ হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কনিনুর বেগম সততা স্বীকার করে বলেন, এসব নিয়োগ-লোক চক্ষুর আড়ালেই হয়। নিয়োগ বাণিজ্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে সভাপতি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক লোক বেশি সুবিধার না তার মন মত সবকিছু করতে চায়।
দৌলতখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, নিয়ম মেনেই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। তার কাছে নিয়োগের তথ্য চাইলে তিনি অস্বীকৃতি জানান। নিয়োগ পরিক্ষায় কতজন অংশগ্রহণ করেছে জানতে চাইলে তিনি দশ জনের কথা বলেন। তবে প্রধান শিক্ষক বলে সাত জন, আর সভাপতি বলেছেন তিন জনের কথা।
তবে এর সাথে জড়িত কারোই কথার সাথে কারোই মিল নেই। যদিও এই নিয়োগের ডিজি হিসাবে নিয়োগ প্রধান করা হয়েছে। দৌলতখান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম মনির ইসলামকে। তারপরও নিয়োগ পরিক্ষা ভোলা সদরে মাসুমা খানুম বালিকা বিদ্যালয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে। লোক চক্ষুর আড়ালে পরীক্ষা নিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের কে নিয়োগ দেন এর সাথে জড়িত থাকা সকল কর্মকর্তারা।
জেলা শিক্ষা অফিসার দীপক হালদার বলেন, এই বিষয়ে আমি এটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে, তদন্ত কমিটি গঠন করাও হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :