ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এহসানুল হক হান্নানের নির্দেশে সংঘবদ্ধ চোরচক্র দৌলতখান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জমিদারবাড়ির আবিদুর রহমানের বসতঘরে চুরি করে। চুরির ঘটনার সাথে জড়িত চক্রের চার সদস্যকে স্থানীয়রা ধোলাই দিলে তারা স্থানীয় ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম বলেছেন। এ রকম একটি ভিডিও দুই তিন দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে দৌতখানেও চলছে নানা আলোচনা। ঘরের মালিক আবিদুর রহমানের দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) চোরচক্রের সদস্য আমির হোসেন (৩৫), মো. সুজন হাওলাদার (২০), মো. মাকসুদ (৩০) ও মো. সুমনকে (৩২) আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্থানীয়রা সন্দেহজনক হিসেবে দৌলতখান পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমির হোসেনসহ বাকি তিনজনকে আটক করে পিটুনি দেয়। পরে তারা চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন এবং চুরি করা জমির দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এহসানুল হক হান্নানের কাছে দিয়েছেন বলে জানান।
এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর ওই দিনই এহসানুল হক হান্নান বিষয়টি অস্বীকার করে দৌলতখান প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে চোরচক্রের প্রধান আমির হোসেনকে বলতে শোনা যায়, তিনি স্থানীয় এহসানুল হক হান্নানের নির্দেশে লালামোহন ও চরফ্যাশন উপজেলা থেকে চোরচক্রের আরো তিন সদস্যকে চুরি করার জন্য আনেন। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জমিদারবাড়ির আবিদুর রহমানের ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে তারা চুরি করেন। ওই ঘর থেকে চুরি করা মালামালের মধ্যে জমির দলিল ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ওই দিন রাতেই এসে হান্নানসহ আরো এক লোক নিয়ে গেছেন।
এদিকে চুরির ঘটনায় প্রকাশ্যে চোরচক্রের সদস্যরা নির্দেশদাতার নাম প্রকাশ করলেও মামলার এজাহারে পুলিশ হান্নানের নাম দিতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী আবিদুর রহমান।
দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. এহসানুল হক হান্নান অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, চুরির ঘটনায় আটক হওয়া আমির হোসেন দৌলতখানের বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ছিলেন। আর এহসানুল হক হান্নান সেই বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে রয়েছেন। আমির হোসেন বিদ্যালয়ে দপ্তরি থাকাকালীন তিনবার ইয়াবাসহ আটক হয়েছেন। তাই নিয়ম অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু আমির হোসেন এর পরও তাকে চাকরি বহাল রাখার জন্য তাকে অনুরোধ করেন।
সেটি করেননি বলে আমির হোসেন চুরি করে ধরা পড়ে তার নাম বলেছেন। তিনি আরো জানান, তিনি দৌলতখানে রাজনীতি করেন। তাকে রাজনৈকিভাবে হেয় করতে একটি পক্ষ আমির হোসেনকে দিয়ে তারা কথা বলিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) সত্য রঞ্জন খাসকেল জানান, আটক চোরচক্রের চার সদস্য প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে নিজেদের চুরির কথা স্বীকার করলেও এর সাথে অন্য কারো নাম তারা বলেননি। এমনকি আদালতে সোপর্দ করার পর চক্রের সদস্য আমির হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারা জবাবন্দি দিয়েছেন। সেখানেও কারো নাম উল্লেখ করেননি। তবে সেখানে বাকি তিন আসামি চুরির কথা অস্বীকার করায় তাদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :