বানারীপাড়ার অদম্য হৃদয়, মাস্টার্সে পড়ার খরচ যোগান ফুটপাতে সব্জি বিক্রি করে


Barisal Crime Trace -FF প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৬, ২০২৩, ৬:২৯ অপরাহ্ণ /
বানারীপাড়ার অদম্য হৃদয়, মাস্টার্সে পড়ার খরচ যোগান ফুটপাতে সব্জি বিক্রি করে

রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি : বরিশালের বানারীপাড়ার জীবন সংগ্রামী এক অদম্য যুবক হৃদয় বেপারী। গরীবের জীর্ণ কুটিরে হৃদয় যেন এক চাঁদের আলো। মাস্টার্সে অধ্যয়নরত হৃদয় চাকরি নামের সোনার হরিণের পিছনে ছুটে ক্লান্ত হয়ে অবশেষে বেছে নিয়েছেন সব্জি বিক্রির কাজ। বানারীপাড়া পৌর শহরের বন্দর বাজারের রাস্তার ওপর ফুটপাতে প্রতিদিন শাকসব্জি বিক্রি করে তিনি তার নিজের মাস্টার্সে পড়ার খরচ ও সংসারে সহযোগিতা করছেন।

মেধাবী হৃদয় বানারীপাড়ার চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় অনার্স শেষ করে চাকরির জন্য অনেক ঘুরেও চাকরি নামক সোনার হরিণের সন্ধ্যান পাননি। তাই লেখাপড়াসহ জীবিকার তাগিদে তিনি সব্জি বিক্রি করছেন। বর্তমানে হৃদয় বরিশাল বিএম কলেজে একই বিষয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। বানারীপাড়া বন্দর বাজারে গিয়ে দেখা যায়,হৃদয়ের সব্জির দোকানে সর্বসাকুল্যে ৭/৮ শত টাকার মালামাল রয়েছে।

এটা বিক্রি করেই লভাংশ দিয়ে তিনি তার লেখাপড়ার খরচ ও সংসারে সহযোগিতা করছেন বলে জানান। তার দরিদ্র পিতা দেলোয়ার হোসেন বেপারীও একই বাজারের সব্জি (তরকারি) বিক্রেতা। তাদের বাড়ি বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড জম্বুদ্বীপ গ্রামে। পিতা-পূত্রের এ সব্জি ব্যবসায় যে সামান্য লাভ হয় তা দিয়ে ৫ জনের সংসারের ভরন-পোষণ খরচ,হাফেজি পড়ুয়া ছোট ভাই তানভীর হোসাইন ও হৃদয়ের লেখাপড়ার খরচ মিটিয়ে সংসারে নুন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা তাদের । দারিদ্রতা যেন তাদের নিত্য সঙ্গী।

তবুও অদম্য হৃদয়। এ প্রসঙ্গে হৃদয় বেপারী বলেন,সৎভাবে কোন কাজই ছোট নয়। সব্জি বিক্রির এ কাজ করেই বাবা আমাকে অর্নাস পাশ করিয়েছেন। স্বপ্ন ছিল চাকরি করে সংসারে সুখ-স্বচ্ছলতা আনবো,দরিদ্র বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাবো। টাকা কিংবা মামার জোর না থাকলে চাকরি পাওয়া দুঃসাধ্য। তাই চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে পিতার ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি।