শরণখোলা প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় হালকা বৃষ্টি ও দমকা বাতাস। শুক্রবার ভোররাত থেকে ভারি বৃষ্টিসহ বাড়তে থাকে বাতাসের তীব্রতা। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে বাগেরহাটের শরণখোলাসহ উপকূলবাসীর আতঙ্ক।
বিশেষ করে ঝড়ের প্রভাবে অধিক ঝুঁকির মুখে রয়েছেন বঙ্গোপসাগর-তীরবর্তী পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার শুঁটকি পল্লীর ১০ সহস্রাধিক জেলে। সেখানে পর্যাপ্ত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন জেলেরা।
দুবলার চরের আওতাধীন শুঁটকি উৎপাদনকারী চারটি চরে মাত্র পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আশ্রয় কেন্দ্রই পরিত্যক্ত। তাতে দুর্যোগে মানুষ আশ্রয় নেওয়ার কোনো উপায় নেই।
বাকি দুটির একটিতে থাকেন দুবলা টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা। আর একটিতে এত লোকের আশ্রয় নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। এই মুহূর্তে দুর্গম চর থেকে কূলে ফিরে আসারও সুযোগ নেই। এমন পরিস্থিতিতে শুঁটকি পল্লীর জেলেরা পড়েছেন মহাবিপদে।
দুবলার চরের মাঝের কিল্লার শুঁটকি ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের জাহিদ হোসেন বহদ্দার জানান, প্রবল বৃষ্টি ও ঝড় চলছে। বঙ্গোপসাগরে বিশাল বিশাল ঢেউ চরে আছড়ে পড়ছে। ঝড়ে মাছ শুকানোর মাচা ও বেড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টিতে শত শত মণ মাছ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বহদ্দার জাহিদ হোসেন আরো জানান, চরে জেলেদের আশ্রয় নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রগুলো সবই ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো বসবাসের অনুপযোগী। নিরুপায় হয়ে জেলেরা যার যার মহাজনদের ঘরে এসে উঠেছে। গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে সবাইকে। বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাস হলে মরণ ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, মৌসুমের শুরুতেই দুর্যোগ আঘাত হানায় শুঁটকি ব্যবসায়ীরা কাঁচা মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। আবহাওয়া দু-এক দিনে স্বাভাবিক না হলে শুঁটকির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
এসিএফ মাহাবুব হাসান বলেন, দুবলার শুঁটকি পল্লীর জেলে, মহাজন ও দোকানিরা নিরাপদে আছেন। আশ্রয় কেন্দ্রের ভবনগুলোর দু-একটি বাদে সবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাতে থাকার পরিবেশ নেই। জেলেসহ শুঁটকিসংশ্লিষ্ট সবাইকে বন বিভাগের অফিস ও নিজ নিজ মহাজনদের ঘরে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
Map plugins by Md Saiful Islam | Android zone | Acutreatment | Lineman Training
আপনার মতামত লিখুন :