ইফতেখার শাহীন, বরগুনা। দক্ষিণাঞ্চল বরগুনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিগত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে আমন ধানের বীজতলা। বিশেষ করে বরগুনা জেলার বিস্তির্ণ এলাকা বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। এতে বীজতলায় থাকা আমনের চারায় পচন ধরেছে।
ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এ অঞ্চলের হাজারো কৃষক। গত ১ মাস ধরে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে টানা ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বরগুনাতে । বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে এই সময়ে। এই অতিবৃষ্টির ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হযয়ে পড়েছে এবং আমনের বীজতলা সম্পূর্ণ পানির নিচে চলে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফসলের মাঠ থেকে কিছু এলাকার পানি নেমে গেলেও আমনের চারায় পঁচন ধরেছে। বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারন আধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ মৌসূমে ৯৯ হাজার ১্শ ৯৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার মানিকখালী এলাকার কৃষক হারুন অর রশীদ বলেন, আমনের বীজতলা একবার করেছি তা বিগত বর্ষায় পঁচে গিয়েছে। পুনরায় এক একর জমির জন্য ২৬ শতাংশ জমিতে বীজতলা করেছি, তাও গত কয়েক দিনের বর্ষায় পঁচে গিয়েছে। আবার নতুন করে বীজতলা করার মতো সময় বা সামর্থ্য কোনোটাই আমার নেই। এই অবস্থায় কৃষকদের সামনে দুটো বড় সংকট প্রথমত, পুনরায় বীজতলা করার সময়সীমা ফুরিয়ে আসছে এবং দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত বীজ, সার ও শ্রমের খরচ অনেকেই বহন করতে পারছেন না।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, বরগুনা জেলায় ঠিক কত হেক্টর জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, কারণ নিন্মাঞ্চলের অধিকাংশ জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে।
পানি মাঠ থেকে নেমে গেলে এর ক্ষতির পরিমাণটা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। আমরা আপদকালীন সময়ে কৃষকদের জন্য বিআর-২২ এবং ২৩ ধানের বীজ সংরক্ষণ করে রেখেছি। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে তা বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। বর্তমান সময়ে কৃষকদের পরামর্শ এবং সহযোগিতার জন্য উপজেলা পর্যায়ে টিম গঠন করে মনিটরিং এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ।
বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমলে পানি নেমে গেলে নতুন করে বীজতলা তৈরির সামর্থ্য অনেক কৃষকেরই নেই। তাই কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার সহায়তা প্রদান করলে দক্ষিণাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ অনেক কৃষকই আমন চাষে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
অতিরিক্ত বৃষ্টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষকদের জন্য এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে আমন ধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এখনই প্রয়োজন দ্রæত পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা ও সরকারি সহযোগিতা, যাতে আমন মৌসুমে খাদ্য উৎপাদনে বড় ধরনের ধ্বস না নামে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.