বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি// ‘ঘরে ঘরে খবর দে, এক দফার কবর দে’ স্লোগান দিয়ে কোটা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়া বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ওবায়দুল নেগাবান এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
গত ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে পদ-পদবি বাগিয়ে নেয়া, দলীয় লোকজনকে বিশেষ সুবিধা দেয়া ও বিরোধী দলের লোকজনকে হয়রানিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, আগস্ট মাসকে সামনে রেখে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে উসকানি দেয়াসহ সরকার পতনের নানা ষড়যন্ত্রের ছক কষে চলেছেন। এ নিয়ে জনমনে জেগেছে নানা প্রশ্ন।
জানা যায়, উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের চরগজালিয়া গ্রামের মৃত শ্যাম নেগাবানের পুত্র ওবায়দুল নেগাবান দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। বর্তমানে তার চাচাতো ভাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক বাচ্চু নেগাবানের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ও তাদের সহযোগিতায় এলাকায় আধিপত্য বজায় রেখে বিভিন্ন লোকজনকে হয়রানি করছেন ছাত-জনতাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়া এই আওয়ামী লীগ নেতা।
বরিশালে ছাত্র-জনতাকে হত্যায় সহায়তাকারী ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিরোধীকারী আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল নেগাবানের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হলেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার না করা কিবা কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের।
তাদের অভিযোগ, পতিত স্বৈরচারী দল আওয়ামী লীগের দোসর, কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অর্থ সরবরাহকারী, আন্দোলনে প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের প্রতিহতের ঘোষণাকারী ওবায়দুল নেগাবান এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন এবং আধিপত্য বজায় রেখেছেন। এমনকি তিনি গত বছরের ৩ ও ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রতিহত করতে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিজ উদ্যোগে বরিশালে নিয়ে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাসহ ছাত্র জনতাকে হত্যার ছক এঁকেছিলেন।
কিন্তু ৫ আগস্টের পর দেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুগে প্রবেশ করলেও আন্দোলনের বিরোধীতাকারী ছাত্রজনতার উপর হামলায় সহায়তাকারী অর্থের যোগানদাতা এই আওয়ামী লীগ নেতা শত শত শহীদের রক্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপটের সাথেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে চলেছেন। তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে। সেই সাথে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য গোপনে কাজ করে চলেছেন বলে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমন্বয়ক রাতুল বলেন, আপনারা জানেন, ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকার ৫ আগস্টের পর পালিয়ে গেছে। এই ফ্যাসিবাদ সরকারের অন্যতম দোসর প্রকাশ্যে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করতে চাওয়া ও অর্থের যোগানদাতা নলুয়ার আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল নেগাবান এখনো বহাল তবিয়তে প্রকাশ্যে তার ব্যবসা ও অন্যান্য কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক এবং ভয়ের কারণ। আমরা মনে করি, এসব মানুষেরা ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিভাবে ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠা করা যাবে, কিভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করা যাবে তারা ঠান্ডা মাথায় সেটার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নলুয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ওবায়দুল নেগাবানের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাকেরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাংবাদিকদের কাছ থেকে তার বিষয়ে জানলাম। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.