নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: কুমিল্লার বুড়িচংয়ে যমজ সন্তান জন্ম দেওয়াকে কেন্দ্র করে এক সৌদি প্রবাসী স্বামী তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিন শিশু নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভুক্তভোগী হেলানা আক্তার (২৭)।
রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের পিতাম্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে জানা যায়, আনন্দপুর গ্রামের আব্দুস ছালামের মেয়ে হেলানা আক্তারের বিয়ে হয় ২০০৯ সালে একই ইউনিয়নের পিতাম্বর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আজিম হোসাইন জনির সঙ্গে। বিয়েতে তিন ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্র দেন কনে পক্ষ।
বিয়ের পর প্রথম সন্তান আলিফের জন্ম হয়। এরপর বিদেশ যেতে স্বামী জনি শ্বশুরবাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। পরিবার ঋণ নিয়ে টাকা পরিশোধ করলে তিনি সৌদি আরব চলে যান।
দেশে ফিরে স্ত্রীর গর্ভে সন্তান আসার খবর পেয়ে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে গর্ভপাতের চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় হেলানাকে শারীরিক নির্যাতন করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ছয় মাস আগে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে হেলানা যমজ সন্তান আলভী ও আসপীর জন্ম দেন। কিন্তু স্বামী বিদেশ থেকে ফোনে মৌখিকভাবে তালাক দিয়ে জানান, তিনি আর সংসার করবেন না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে হেলানা বলেন, 'ভাবছিলাম সন্তানদের মুখ দেখে স্বামীর মন বদলাবে। কিন্তু তালাক দিয়ে একপ্রকার পথে ফেলে দিয়েছে।' হেলানার ভাই জামাল হোসেন ও বোন মমতাজ বেগম জানান, স্বামীকে বিদেশ পাঠাতে যৌতুকের টাকা দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সন্তান নষ্ট না করায় হেলানা নির্যাতনের শিকার হন। এখন বাবার বাড়িতে অভাবের মধ্যে তিন সন্তান নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রফিক বলেন, সালিশ বৈঠকে পুনর্মিলনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে জনি ও তার পরিবারের একগুঁয়েমির কারণে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল করিম জানান, সামাজিকভাবে সমাধান না হওয়ায় বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।
এ বিষয়ে জনির মা হাসিনা বেগম বলেন, হেলানার আচরণ ভালো নয়, তাই ছেলে সংসার করবে না। ভরণপোষণ নিয়ে তারা কিছু বলতে চাননি। বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক জানান, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে, পুলিশ আইনি সহায়তা দিচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.