নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বহুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। জীবনের শুরুতে সমুদ্র থেকে পোনা মাছ ধরে এবং হকারির মতো পেশায় যুক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
পরে জাতীয় পার্টির শীর্ষ এক নেতার আর্শীবাদে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তার হাত ধরেই জমি কেনাবেচার দালালি শুরু করে ধীরে ধীরে কোটিপতি হয়ে ওঠেন এবং একপর্যায়ে মহিপুর থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি হন।
২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল অর্থ খরচ করে ও প্রভাব খাটিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনী মাঠে তার প্রভাব ও অর্থের ছাপ ছিল সুস্পষ্ট। ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকায় বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
সে সময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে কাজ করাই তার একমাত্র লক্ষ্য। আর কুয়াকাটাবাসীর উন্নয়ন হবে তার অগ্রাধিকার।
কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। গরীব ও অসহায় মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া, কুয়াকাটায় লুটপাট, দখল ও সালিশবাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকা, পৌরসভার ইজারার নামে ডিম, ডাব, গোস্ত ও কাঁচাবাজার থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ, আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে টেন্ডারবাণিজ্য এবং নিয়োগে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ স্থানীয়দের মুখে মুখে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগেই তিনি আন্দোলন দমনে সশস্ত্র মহড়া এবং বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। অভিযোগ রয়েছে, ফেসবুকে ছাত্র-জনতার পক্ষে পোস্ট দেওয়ায় সাধারণ মানুষকে মারধর, দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায়ও তিনি জড়িত ছিলেন।
এসব ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে কুয়াকাটা পৌর বিএনপি ও বিএনপি নেতাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
Ezoic
গত ৯ আগস্ট ঢাকার গুলশানে জাতীয় পার্টির কাউন্সিলে সামনের সারির আসনে আনোয়ার হাওলাদারের উপস্থিতি নতুন করে দলবদলের গুঞ্জন তোলে। বিষয়টি নিয়ে আনোয়ার হাওলাদার বলেন, তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেননি, বরং দাওয়াত পেয়ে সেখানে গিয়েছেন।
এবিষয়ে কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান হাওলাদার বলেন, আনোয়ার বড় সুবিধাবাদী; স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিএনপির ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়ে পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন, আর দালালি, টেন্ডারবাজি ও অর্থ আত্মসাতের একাধিক অভিযোগের পাশাপাশি তিনি একাধিক মামলার আসামি।
এদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আনোয়ার আগে জাতীয় পার্টিতে ছিলেন, তবে এবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.