নিজস্ব প্রতিবেদকঃ করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সরকার ঘোষিত লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে নির্দিষ্ট সময়ে কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু জেলার বিভিন্ন স্থানে সাপ্তাহিক কিংবা প্রতিদিনের কাঁচাবাজারে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। তাছাড়া সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাজারগুলো উন্মুক্ত স্থানেও স্থানান্তর হয়নি।
রবি ও সোমবার (১৮ ও ১৯ এপ্রিল) ঝালকাঠি জেলার বেশ কয়েকটি হাট-বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজাপুর বাগড়ি সাপ্তাহিক হাটে দেখা গেছে, গাদাগাদি করেই সবজি, মাছ, মাংস, চাল, ডাল, ফলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনাবেচা হচ্ছে। দুই-একজন বিক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা গেলেও অনেকের মুখেই নেই। আবার ক্রেতাদেরও কারও মুখের মাস্ক থুতনিতে, আবার কারও পকেট। কোথাও ছিল না সামাজিক দূরত্ব।
একই চিত্র দেখা গেছে ঝালকাঠির পূর্ব চাঁদকাঠি ও কালীবাড়ি রোডের বড়বাজারেও। গাদাগাদি করে ক্রেতাদের বাজার করতে দেখা গেছে। বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাওয়া হলে একে অপরকে দোষারোপ করছেন ক্রেতা-বিক্রেতা।
শফিকুল ইসলাম নামে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘কত সময় ধরে মাস্ক পরে থাকা যায়। মাস্ক পরে গ্রাহকের সঙ্গে কথা বললে তারা কথা বোঝেন না। আর আমি তো ক্রেতাদের কাছ থেকে তিন ফুট দূরে অবস্থান করছি। সুতরাং সমস্যা হবে না।
অন্যান্য বাজারেও একই অবস্থা। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। কেনাকাটাও চলছে গাদাগাদি করে। যত্রতত্র হাঁটছেন মানুষ। বাজারের প্রবেশমুখগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক কিছুই নেই। কোনও সংস্থাকেও বাজার মনিটরিং করতে দেখা যায়নি।
মাস্ক ব্যবহার না করার বিষয়ে জানতে চাইলে নবীর উদ্দিন নামে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘কাজের ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় ভুলে যাই। তাছাড়া গরমে ঘামের সঙ্গে ভিজে যায়। মানুষও কিছু বলে না। করোনা হলেই এমনিতেই হবে। মাস্ক পরলেও হবে না পরলেও হবে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, ‘আমাদের মোবাইল কোর্ট মাঠে কাজ করছে। মামলা ও জরিমানাও করা হয়েছে। তবে কিছু কিছু মানুষ হয়তো আইনটি কম মানছে। বেশির ভাগ মানুষ যাতে করোনা না হয় সেজন্য অনেকটা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। মানুষ কর্মের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে বুঝিয়ে সচেতন করার জন্য। তাছাড়া আমরা অনেকগুলো বিষয় চালু রেখেছি। ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা আছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা। মানুষের মুভমেন্ট পুরোপুরি বন্ধ করলে অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা। মাঠ খুঁজে বের করে কাঁচাবাজারগুলো সেখানে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি।
উল্লেখ্য, লকডাউন চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়।
করোনার এ সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে মোট ১১টি নির্দেশনা দেয় সরকার। এসব নির্দেশনা মানা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়।