নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র এখন চরম বিপর্যয়ের মুখে। এক সময় যেখানে স্বচ্ছ জলরাশি ও সাদা পাথরের মুগ্ধতা পর্যটকদের আকৃষ্ট করত, আজ সেখানে ধু ধু বালুচর ও শত শত গর্ত। এতে কমে গেছে পর্যটক।
২০১৭ সালে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথরমহালের ধলাই নদীর উৎসমুখে পাহাড়ি ঢলে ভর করে নেমে আসে পাথর। পাঁচ একর জায়গাজুড়ে জমা হয় সেসব পাথর। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ পাহারা বসায় সেখানে।
এলাকাটি সংরক্ষিত করে। সাদা পাথরে বিস্তীর্ণ হয়ে উঠে জনপদ। থররাজির স্তূপ থেকে সৃষ্ট পর্যটনকেন্দ্রটি সারাদেশে পরিচিত করেছে কোম্পানীগঞ্জকে। সীমান্তের জিরো লাইন সংলগ্ন ১০ নম্বর এলাকার নাম পড়ে যায় সাদা পাথর। মনোমুগ্ধকর সেই সাদা পাথর এলাকাটি এখন প্রায় বিবর্ণ।
জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে প্রকাশ্যে পর্যটকদের সামনেই সাদা পাথর লুট হয়েছে। যে সৌন্দর্য দেখার জন্য দেশ এবং দেশের বাইরের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন, তা মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে নিয়ে গেছে লুটেরারা। আর পর্যটন স্পটে লুটপাট দেখে হতাশ সচেতন নগরবাসী ও পর্যটকরা।
চট্টগ্রাম থেকে আসা ফজলুল হক বলেন, আগে সাদা পাথরের যে সৌন্দর্য ছিল, এখন আর তা নেই। লুটেরা চক্র পাথর লোড করে নিয়েছে। সিলেট নগরের বাসিন্দা সামিয়া বেগম জানান, প্রকৃতির হাতে গড়ে ওঠা এ পিকনিক স্পটটি বাঁচাতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ করছেন, বর্তমান সরকারের আমলে চলছে এই লুটপাট। আর কিছু দিন এমন চললে সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একদম ধ্বংস হয়ে যাবে।
এদিকে পাথর লুটের মহোৎসবের পর দুদকের একটি টিম সাদাপাথরের বিরানভূমি দেখে এসেছেন। এ ঘটনার সাথে প্রশাসনের লোকজনের জড়িত থাকার বিষয়টি ওঠে এসেছে। এই লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেটের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাত জানান, আসার সময় দেখে এসেছি বিভিন্ন স্টোন প্রেসার মেশিনে প্রচুর সাদা পাথর মজুদ রয়েছে। এই লুটপাটের পেছনে কারা জড়িত, তা সনাক্ত করতে আমরা কাজ করছি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, প্রশাসন বলছে, পাথর লুটপাট বন্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। মামলা ও গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। পরিবেশকর্মী এবং সচেতন নগরবাসী মনে করেন, সরকারের শক্ত অবস্থান না হলে ভবিষ্যতে পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে পর্যটন শিল্প চরম ক্ষতির মুখে পড়বে সিলেট।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.