প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২০, ২০২৫, ১:০৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ১৪, ২০২৫, ৫:৫৫ অপরাহ্ণ
চরফ্যাশনে শিক্ষক নেতাক আটকে রেখে ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর আদায়, আদালতে মামলা

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি।। ভোলার চরফ্যাশনে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী শিক্ষক নেতা মাওলানা রুহুল আমিনকে প্রকাশ্যে মারধর ও কক্ষে আটকিয়ে রেখে ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মো. জাহাঙ্গীর নামে এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
গত সোমবার (১২ আগষ্ট ) দুপুরে শিক্ষক নেতা মাওলানা রুহুল আমিন বাদী হয়ে চরফ্যাশন বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার নং ৬৫৮/২৫ এর আগে গত (৩ আগষ্ট) সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার দুলারহাট হাট বাজারের আব্দুল্লাহ হোটেলে এবং ভোর রাত ৩.৫০ মিনিটের দিকে দুলার হাট বিএনপি অফিসে এ ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মাওলানা মো. রুহুল আমিন চরফ্যাশন পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এবং তিনি উপজেলা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। অভিযুক্ত মো. জাহাঙ্গীর উপজেলার দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এবং তিনি চর নূরুল আমীন লতিফিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রভাষক পদে রয়েছেন।
শিক্ষক নেতা মাওলানা মো. রুহুল আমিন ও আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়,তিনি একটি এবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক পদে থাকায়। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তন হওয়ায় প্রভাষক জাহাঙ্গীর তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রাণে শেষ করার জন্য খুঁজতে থাকে।
ঘটনারদিন রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মাওলানা রুহুল মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে দুলার হাট বাজারে দেখা করতে গেলে ওই বাজারের আবদুল্ল্যাহ হোটেলে চা খাওয়ার জন্য বসলে প্রভাষক মো. জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন মিলে তাকে বলে বিগত ১৭ বৎসর বহু টাকা ইনকাম করেছো। এখন আমাদেরকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা তাকে হোটেল থেকে টেনে বের করে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে এবং কিল ঘুশি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে।
আরও জানা যায়, পরবর্তীতে দুলারহাট স্থানীয় বিএনপির পার্টি অফিসে নিয়ে মাওলানা রুহুল আমিনকে আটকে রাখেন। এবং তার নিকট ৬ লাখ টাকা দাবী করেন। এক পর্যায় তাকে পিটিয়ে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। এবং হত্যার হুমকি দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করেন। ৩টি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাত অনুমান ৩.৫০ মি. ছেড়ে দেন প্রভাষক জাহাঙ্গীর। তাদের মারধরে গুরুত্ব অসুস্থ্য হলে স্থানীয়রা তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করে।
বৃহস্পতিবার(১৪ আগষ্ট) দুপুরে শিক্ষক নেতা মাওলানা রুহুল আমিন বলেন, আমি ৩ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। বিষয়টি রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষক সমিতির নেতাদের জানিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করি। আমাকে মারধর ও ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, আমি জাহাঙ্গীরের কঠিন বিচারের দাবী জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত প্রভাষক মো.জাহাঙ্গীর বলেন, আমার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার এলাকায় কয়েকটি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার এমপিভুক্ত, নবায়ন সহ বিভিন্ন অজুহাতে ৬ লাখ টাকা নিয়েছেন মাওলানা রুহুল আমিন। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানকে এমপিভুক্ত এবং নবায়ন করতে পারেনি।
তাই তার কাছে টাকা ফেরত চাই। সে টাকা দেই দিচ্ছি বলে তালবাহানা করতে থাকে। ৩ আগষ্ট দুলারহাট বাজারে তাকে পেলে সে টাকা দিবে বলে স্থানীয় নেতাদের সামনে স্বীকারোক্তি দেয়। এবং পরেরদিন টাকা দিবে বলে স্টাম্পে স্বাক্ষরও দেন তিনি। যেহেতু তিনি আদালতে মামলা করেছেন তার জবাব আমি আদালত দিবো।
দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ ইফতেখার জানান, ঘটনাটি শুনেছি। মাওলানা থানায় অভিযোগ করেনি। যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের রায় অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.