নিজস্ব প্রতিবেদক// অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের পক্ষে মামলার আবেদনকারী ওয়ার্ড মাস্টারকে দায়িত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক। অভিযোগ রয়েছে, বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থী মারধরের ঘটনায় ওয়ার্ড মাস্টার নেতৃত্বে ছিলেন।
জানা গেছে, স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনশনে ছিলেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ১৪ আগস্ট বেলা সোয়া ১১টার দিকে সেবা প্রত্যাশী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির সিকদার ও তার মাকে মারধর করেন হাসপাতালের কর্মচারীরা। এরপর স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের বিরুদ্ধে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে হাসপাতালের গেটের সামনে মানববন্ধন করে মূল ভবনে ফিরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের মারধর করে বেড় করে দেন তারা।
ওইদিন রাতে ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় আন্দোলনের সংগঠক মহিউদ্দিন রনিসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মহিউদ্দিন রনি রড দিয়ে একজনকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এছাড়া অন্যান্যরা ১০ জনকে পিটিয়েছে এবং নার্স-আয়ারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মারধরের পর তাদের আসামি করে মামলার আবেদন নিয়ে সমালোচনার তৈরি হলে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন হাসপাতালের পরিচালক। কমিটির ৪ নম্বর সদস্য করা হয় ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীলকে। যিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নেতৃত্বে এবং মামলার আবেদনের বাদী ছিলেন।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক ডা. এসএম মনিরুজ্জামান, ডা. মো. ইখতিয়ার আহসান, উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক মোসাম্মৎ শাহনাজ পারভীন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল জলিল মিয়া। ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তদন্ত কমিটিতে রাখাকে প্রহসন উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট আবু-আল-রায়হান বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রহসন করছে। এতি অত্যন্ত কষ্টের যে যৌক্তিক দাবিসমূহকে থামিয়ে দিতে হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তাও কাজ করছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি কখনোই তদন্ত কমিটিতে থাকতে পারবেন না। এটি আইনের লঙ্ঘন। আমি মনে করি অভিযুক্তদের রক্ষা করতে জেনে বুঝেই পরিকল্পনা অনুসারে তদন্ত কমিটিতে অভিযুক্তকে রাখা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দত্ত বলেন, মামলার বাদী কিংবা থানায় অভিযোগকারী সাধারণত তদন্ত কমিটির সদস্য হন না। তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয়। যাতে ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত করা যায়।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়ের দাপ্তরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। তদন্ত কমিটির সভাপতি হলেন উপ-পরিচালক। কমিটিতে একজন চিকিৎসকও রয়েছেন। কমিটির প্রধান যদি চান তাহলে ওয়ার্ডবয়কে পরিবর্তন করা যেতে পারে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.