নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: সিলেটের গোয়াইনঘাটে সড়কের মধ্যে তিনটি গাছ রেখেই সিসি ঢালাই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত সড়কের মধ্য থেকে গাছগুলো কেটে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
রোববার (২৪ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার বিছনাকান্দি ইউনিয়নের হাদারপার থেকে দমদমিয়া পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিভাগের বাস্তবায়নে ভোলাগঞ্জ আরএইচডি দয়ারবাজার ভাটরাই হাদারপার জিসি সড়কে দমদমিয়া লামার বাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। এতে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সিলেটে আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পের কাজ হিসেবে ভোলাগঞ্জ (আরএইচডি) দয়ারবাজার ভাটরাই হাদারপার জিসি সড়কে হাদারপার টু দমদমীয়া পর্যন্ত ৭টি কালভার্ট নির্মাণ ও সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক প্রশস্ত করা ও আরসিসি ঢালাই কাজ শুরু হয়েছে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর। এটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৬ সালের ২৮ জুনের মধ্যে।
এ কাজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৮১ টাকা। চুক্তি মূল্য সড়কের কাজ পায় এসএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড এমএস কামরুল অ্যান্ড ব্রাদার্স (এন) নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
তবে কাজটির বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছেন রবিউল হাসান নামে একজন ঠিকাদার। কাজের এক পর্যায়ে এসে দমদমিয়া লামার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় প্রায় সাড়ে ১৬ ফুট সড়কের ৫-৬ ফুট মাঝখানে বড় বড় তিনটি রেন্টি কড়ই গাছ রেখেই সিসি ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আলা উদ্দিন জানান, সড়কের মাঝখানে গাছ রেখে ঢালাই—এমন কাজ কখনো দেখিনি। এই গাছগুলো রেখেই ঢালাই দেওয়ায় নতুন করে দুর্ভোগ পোহাতে হবে হাজার হাজার পথচারীর। এসব গাছের কারণে সড়কটি সরু হয়ে পড়ায় দুর্ঘটনারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এই গাছগুলো কেটে সড়কের গুণগত মান ঠিক রেখে আরসিসি ঢালাই দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, সড়কের মধ্যে তিনটি গাছ রেখেই ঢালাই দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের পাশে ২০ থেকে ২৫টি গাছের শিকড় কেটে ও গাছের অর্ধেক অংশ রেখে আরসিসি ঢালাই কাজ করা হয়েছে। এতে বৈরী আবহাওয়া বা ঘূর্ণিঝড় এলে সেসব গাছ ভেঙে দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। জনস্বার্থে সড়ক থেকে দ্রুত এই গাছ কেটে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার রবিউল হাসান বলেন, কাজের শুরুতেই এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আমিও চেষ্টা করেছি গাছগুলো কাটার জন্য। রাস্তার স্বার্থে জনগণের স্বার্থে এ তিনটি গাছ কাটা প্রয়োজন। ইউএনও আছে, পরিবেশের ব্যাপার আছে, উনারা যদি দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নিয়ে গাছগুলা কাটিয়ে দেয় তাহলে কাজটা সঠিক ও সুন্দরভাবে করা যাবে।
তিনি বলেন, আজ যে সিসি ঢালাই হয়েছে মূলত মিস্ত্রিদের ভুল বোঝাবুঝিতে ঢালাইটা হয়েছে। তবে ঢালাইটা সরাইয়া ফেলা হয়েছে যাতে পরে গাছ কাটলে কোনো সমস্যা না হয়। সড়কের মধ্যে গাছ থাকায় সড়কের কাজে বিঘ্ন হচ্ছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) হাসিব আহামেদ বলেন, কাজের শুরু থেকেই গাছ ইউএনও স্যারকে বলতেছি সরেজমিন একদিন চলেন গাছ কাটতে হবে। মিটিংয়ে আলোচনা করেছি এবং গাছ কাটার সিদ্ধান্তও হয়েছে। কিন্তু গাছ কাটতে হলে ফরেস্টের স্টিমেট লাগবে। কিন্তু এগুলো কোন প্রজাতির গাছ, মূল্য কত এটা নির্ধারণ করবে বন অধিদপ্তর। বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার ও বিট অফিসার কেউ মিটিংয়ে আসে না।
তিনি আরও বলেন, ফরেস্ট অফিস তো আমার কথা শুনবে না। ইউএনও স্যারকে বলেছি তিনি চিঠিও দেননি। এমনকি পদক্ষেপ নেননি। তা ছাড়া ওই জায়গার আগে এবং পরে আরসিসি ঢালাই হয়েছে। শুধু এই জায়গাটায় সিসি করা হয়েছে, আরসিসি এখন হবে না। এখনো এ অবস্থায় গাছ কাটা যাবে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে এসেছে। অনেকেই অবগত করেছেন। এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.