লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলার মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষে প্রায় ৪০ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে কুন্ডের হাওলা রশিদিয়া দাখিল মাদরাসা। এই মাদরাসার অধিকাংশ শিক্ষার্থীই জেলে পরিবারের সন্তান।
তবে বিগত ৫ বছর ধরে ওই মাদরাসার একতলা বিশিষ্ট ভবনটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ভবনটির ছাদ, দেয়াল ও বিম থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা। বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে, ভিজে যায় শিক্ষার্থীদের বইখাতাসহ মাদরাসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
এতে চরম আতঙ্কে রয়েছেন ওই মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেঘনা নদীর তীরবর্তী পাটোয়ারীর হাট এলাকায় ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় কুন্ডের হাওলা রশিদিয়া দাখিল মাদরাসাটি। ১৯৮৭ সালের দিকে এমপিওভুক্ত হয় ওই মাদরাসা।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত টিনশেড ঘরে মাদরাসাটির শিক্ষা কার্যক্রম চলে। এরপর একতলা বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয় ওই মাদরাসার জন্য। নির্মাণের পর কোনো প্রকার মেরামত না করায় এখন ওই ভবনটি চরম বেহাল হয়ে পড়েছে। কুন্ডের হাওলা রশিদিয়া দাখিল মাদরাসায় বর্তমানে ৪৩৩ জন শিক্ষার্থী এবং ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।
মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুবায়েত, মোসা. লিজা এবং দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম জানায়, মাদরাসার ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। যার ফলে আমরা ক্লাসে ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারছি না। ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে, বৃষ্টি হলে ছাদ থেকে পানি পড়ে। যেকোনো সময় ভবনটি ধ্বসে পড়তে পারে।
তাই আমাদের মাদরাসায় এখন নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা জরুরি। কুন্ডের হাওলা রশিদিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান ও মাওলানা মো. ইউসুফ বলেন, মাদরাসার ভবনটি বিগত কয়েক বছর ধরে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছি।
ক্লাস চলাকালে বিভিন্ন সময় ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে, বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। বিকল্প কোনো ভবন না থাকায় ঝুঁকি জেনেও এই জরাজীর্ণ ভবনটিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। দ্রæত সময়ের মধ্যে এই মাদরাসায় একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। না হয়, যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
মাদরাসার সুপার মাওলানা মো. বশির উল্যাহ জানান, ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ার পর থেকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে নতুন ভবনের জন্য লিখিত আবেদন করেছি। বর্তমানে আমাদের মাদরাসার ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। মাদরাসায় এসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম আতঙ্কে থাকেন।
এতে করে আমাদের মাদরাসার পড়ালেখার মান নষ্ট হচ্ছে। তাই দ্রæত সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ বলেন, মাদরাসার ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় পাশে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে সাময়িকভাবে কার্যক্রম চালানোর জন্য ইতোমধ্যে এডিপি থেকে দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ওই মাদরাসায় নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দিতে চিঠি লিখবো, বরাদ্দ পেলে সেখানে ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.