চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি// ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চর-কলমি ইউনিয়নের ৭২ নং দক্ষিণ চরমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর গড়াতেই বন্ধ হয়ে যায় পাঠদান। বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার নিয়ম থাকলেও দুপুর ১টার আগেই তালা ঝুলে যায় বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে। ফলে পড়াশোনায় বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকেরা।
বিদ্যালয় খোলা তারিখে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে হাসি-খেলায় মুখর হয়ে ওঠে পরিবেশ। কেউ বই-খাতা হাতে নিয়ে ছুটেন শ্রেণিকক্ষে, কেউ বা বন্ধুদের সঙ্গে গল্পে মেতে থাকেন। ছোট্ট মুখগুলোয় ফুটে উঠে পড়াশোনায়।
কিন্তু দুপুর নামতেই পাল্টে যায় সেই চিত্র। রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়—বিদ্যালয়টি ফাঁকা, শ্রেণিকক্ষগুলো অন্ধকার, প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। নেই কোনো শিক্ষক, এমনকি অফিস সহকারীও অনুপস্থিত। বই-খাতা হাতে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইফুল জানায়, “আমরা সকালে বিদ্যালয়ে আসি। দুপুরের পর স্যাররা না থাকায় কিছুক্ষণ খেলে, এখন বাড়ি চলে যাই।” তার সহপাঠী রায়হানের অভিজ্ঞতাও একই। সে বলে প্রায় সময়েই শিক্ষকরা বিদ্যালয় দুপুরে আগে ছুটি দিয়ে দেন।"
শিক্ষার্থী সুমন অভিযোগ করে বলে, “সকালে বিদ্যালয়ে কোচিং হয়, কিন্তু দুপুরে শিক্ষকরা বাড়ি চলে যান। ফলে ক্লাসের পড়া ঠিকমতো বুঝতে পারি না।”
শুধু পড়াশোনা নয়—শিক্ষকদের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো হয় অফিস সহকারীর কাজ, এমনকি বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বও চাপানো হয় তাদের ওপর—অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয় কৃষক ফারুক বেপারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, প্রাইভেট পড়ানোর সামর্থ্য নেই। স্কুলেই যদি শিক্ষকরা না পড়ান, তাহলে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার ছাড়া আর কিছু নয়।”
কয়েকজন অভিভাবক বলেন, নিয়মিত ক্লাস না হলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষায় পিছিয়ে পড়বে, যার বোঝা বইতে হবে পরিবার ও সমাজকে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলী হোসেন জানান, “শিক্ষকরা পারিবারিক ও প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় আজ বিদ্যালয়ের দুপুর বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের দ্রুত ছুটি দেওয়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এমন আর হবে না।” এবং বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক কোচিং পড়াবেন না।
চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, “বিকাল ৪ টার আগে কোনো বিদ্যালয় বন্ধ করার নিয়ম নেই। ওই বিদ্যালয়টি দুপুরে কোনো বন্ধ করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.