নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন প্রায় শূণ্যের কোঠায়। নভেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে এ অঞ্চলের ৬ জেলায় গত ১৮ মাসের সর্বনি¤œ সংক্রমন শনাক্ত হয়েছে।
এসময়ে দক্ষিণাঞ্চলে মাত্র ২৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও কোন মৃত্যু সংবাদ ছিলনা। তবে এসময়ে নমুনা পরিক্ষাও যথেষ্ঠ হ্রাস পেয়েছে। গত ১৫ দিনে এ অঞ্চলে মাত্র ১ হাজার ৭৬৭ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২৮ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার এখন ১%-এ কিছু বেশী হলেও চলতি মাসে দুদিন তা ছিল শূণ্যের কোঠায়। তবে দুমাস আগেও দৈনিক নমুনা পরিক্ষার সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ হাজার। জুলাইর শেষভাগে গড় সংক্রমন হার ছিল ২২.৬৫%।
করেনা সংক্রমন হ্রাসের সাথে নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনও বিদায় হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও এখন ৫% মানুষও ফেসমাস্ক ব্যবহার করছেন না। স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনে প্রশাসনের তরফ থেকেও কোন তাগিদ নেই। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিভাগ সহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগনও।
স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত জুলাই মাসের প্রথম ১৫ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে ৬ হাজার ৭১০ জন করোনা রোগী শনাক্তের বিপরিতে মৃত্যু হয় ৫৭ জনের। আগষ্ট মাসের একই সময়ে শনাক্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৩২৬ জনে উন্নীত হবার পাাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্ধি পেয়ে ১২১ জনে পৌছে।
তবে আগষ্টের শেষভাগ থেকে করোনা সংক্রমন হার কিছুটা হ্রাস পেতে শুরু করে সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে আক্রান্তের সংখ্যাটা প্রায় এক-দশমাংশে হ্রাস পায়। এসময়ে নতুন ৭৯১ জন আক্রান্তের বিপরিতে মৃত্যু হয় ১৮ জনের। অক্টোবরের প্রথমপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা আরো হ্রাস পায়। এসময়ে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১৪৪ জন আক্রন্তের মধ্যে মৃত্যু হয় মাত্র দুজনের। এমনকি ১৫ অক্টোবরের পরে গত একমাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনায় কোন মৃত্যু সংবাদ দেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ।
আর বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, নভেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ২৮ জন হলেও কোন মৃত্যু সংবাদ নেই। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে গত ১৯ মাসে সর্বমোট ২ লাখ ২৩ হাজার ৬১০ জনের নমুনা পারিক্ষায় ৪৫ হাজার ২৯৩ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ হিসেবে এপর্যন্ত করেনা শনাক্তের গড় হার ২.২৬% হলেও চলতি মাসের ১৫ দিনে তা ১%-এর কিছু বেশী। অথচ গত জুলাই মাসে শনাক্তের হার ৭৪% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ছিল।
দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি জেলার মধ্যে এখনো মহানগরী সহ বরিশাল জেলাই আক্রান্ত ও মৃত্যুার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬% জনসংখ্যার বরিশাল মহানগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজারের বেশী। এ নগরীতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০২ জনের। আর মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় ৭৯ হাজার ৭৩৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৮ হাজার ৩০৪ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। যারমধ্যে মারা গেছেন ২৩০ জন।
পটুয়াখালীতেও সর্বমোট ৪০ হাজার ৯৩০ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৬ হাজার ২৩০। মারা গেছেন ১০৯ জন। দ্বীপ জেলা ভোলাতে ৩৪ হাজার ৪৯৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৬ হাজার ৮৬১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯১ জনের। পিরোজপুরে ২২ হাজার ৯৭৬ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৫ হাজার ২৯০। মারা গেছেন ৮৩ জন।
দক্ষিণাঞ্চলে সর্বাধীক মৃত্যুহারের বরগুনাতে এপর্যন্ত ২৬ হাজার ৩০৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ হাজার ৯৫৫ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হলেও মারা গেছেন ৯৭ জন। গড় মৃত্যুহার ২.৪৫%। আর এ অঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠী করোনা শনাক্তে এখনো শীর্ষে। জেলাটিতে এপর্যন্ত ১৯ হাজার ১৬৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৫৩। গত ১৫ দিনে জেলাটিতে নতুন কোন শনাক্ত বা মৃত্যু না হলেও এখনো গড় শনাক্তের হার দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ ২৪.২৭%। জেলাটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জনের।
অপরদিকে দক্ষিনাঞ্চরে এপর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৩ হাজার ৬৫৯ জন সুস্থতার গড় হার এখন ৯৬.৩৯%।