আন্তর্জাতিক ডেস্ক// ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে বিশ্বের অন্যতম দুই পরাশক্তি রাশিয়া ও চীন। পশ্চিমাদের পাত্তা না দিয়ে তারা তৈরি করছে নতুন বলয়। এই বলয়ে ভারত, মালেশিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, ইরান ও ব্রাজিলের মতো সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোকেও কাছে টানতে সক্ষম হয়েছে তারা।
ভারতকে চাপ দিয়ে বশ মানাতে গিয়ে উল্টো বিপদে পড়েছেন ট্রাম্প। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুধু অনমনীয় অবস্থানই নেননি, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কার্যত শক্তিই দেখাচ্ছেন। আগস্টের শুরুর দিকে ট্রাম্প অপ্রত্যাশিতভাবে ভারতকে কঠোর দ্বৈত শুল্কের আওতায় নেওয়ার পর থেকে তিনি চারবার মোদিকে ফোন করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ফোন ধরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
এই সময়ে মোদি দুবার রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে মস্কোয় পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়ন করেছেন।
চীন, রাশিয়া ও ভারত দীর্ঘদিন ধরেই সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন বা ‘এসসিও’কে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিকল্প একটি মঞ্চ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর আগের বেশ কয়েকটি এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে নিজে না গিয়ে তার প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরকে। কিন্তু এবারে তার ব্যতিক্রম করেছেন তিনি। নিজেই সশরীরে তিয়ানজিনে হাজির হয়েছেন। গেল সাত বছরের মধ্যে চীনে এটাই ছিল তার প্রথম সফর।
মোদির এই সফরে চটেছে যুক্তরাষ্ট্র। পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মোদির বৈঠককে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। তিনি বলেন, রাশিয়ার নয়, যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকা উচিত ভারতের।
এসসিও সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একই লিমুজিনে চড়েন মোদি। গাড়ির পেছনের সিটে দুজন পাশাপাশি বসে তারা শহরের রিটজ কার্লটন হোটেল অভিমুখে রওনা হন, যেখানে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পথে প্রায় এক ঘণ্টা তারা একান্তে কথাবার্তা বলেন। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম বলছে, ‘এই কথাবার্তা ছিল একেবারেই গোপন, যা অন্যদের কানে পৌঁছানোর জন্য নয়!’ নরেন্দ্র মোদি ও ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষ ও সুবিধাজনক ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ জোরালো করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ফলে এশিয়া মহাদেশে কূটনৈতিক সমীকরণে কিছুটা বদল আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প যেভাবে ভারত ও চীনের উপর শুল্কের বোঝা চাপিয়েছেন, এতে পরিস্থিতির বদল হয়েছে। মার্কিন শুল্ক ঝড়ে ভারত ও চীনের কাছাকাছি আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ট্রাম্প নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছেন। যেটা তিনি করে চলেছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বাকি বিশ্ব থেকে। এতে মার্কিন অর্থনীতি বড় ধাক্কা খাবে।
কারণ বিশ্বের ৬৫ শতাংশ ব্যবসার লেনদেন মার্কিন ডলারের মাধ্যমে হয়। এজন্য তাদের বাণিজ্যে বিপুল ঘাটতি থাকলেও ডলার ছাপানোর সুযোগ থাকায় তারা যা খুশি তাই করতে পারে। কিন্তু রাশিয়া, চীন ও ভারত যদি ডলারের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে একটি অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা গড়ে তোলে, তাহলে সারা বিশ্বে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটবে। এতে চরম বেকায়দায় পড়বে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.