রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: বানারীপাড়ায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো: সবুর খানের বিরুদ্ধে বিএ পাসের মিথ্যা তথ্য দিয়ে উপজেলার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার অভিযোগ তদন্তে নেমেছে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। এ বিষয়ে "শিক্ষাগত যোগ্যতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্কুল সভাপতি' শিরোণামে সম্প্রতি অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ বিভিন্ন পত্রিকায় রির্পোর্ট প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয় এবং বোর্ড কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর নির্দেশে বোর্ডের সহকারি সচিব অতিরিক্ত দায়িত্ব বিদ্যালয় নিবন্ধন মোঃ মাছুম মিয়া মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন। তদন্ত কর্মকর্তা বোর্ডের সহকারি সচিব মোঃ মাছুম মিয়ার মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি সাড়া না দেওয়ায় তদন্তের বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এ প্রসঙ্গে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা পেলে কমিটি বাতিলসহ মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অপরাধে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মো. রফিকুর ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঃ সবুর খান সভাপতি, মো. হুমায়ুন কবিরকে অভিভাবক সদস্য, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফিরোজ আহম্মেদকে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য ও প্রধান শিক্ষক মো. ফকরুল আলমকে পদাধিকার বলে সদস্য সচিব করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল কমিটির সভাপতি হতে হলে তাকে কমপক্ষে স্নাতক পাশ হতে হবে।
বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের সময়ে দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে সবুর খান নিজেকে বিএ পাস উল্লেখ করেন। কিন্তু এর অনুকূলে তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কোনো কপি জমা দেননি। সেই অনুযায়ী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবুর খানের নাম তালিকার এক নম্বরে রেখে সুপারিশ বোর্ডে পাঠান।
অভিযোগকারী স্থানীয় মামুন ফরাজী বলেন, বাইশরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খান তার বায়োডাটায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএ পাস উল্লেখ করেছেন। মূলত তিনি বিএ পাস নন। বিএনপির নেতা হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রায় দেড়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার বিএ পাসের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আবেদন করেছি। এদিকে লিখিত ওই আবেদন করার প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছিলেন না। পত্রিকায় রির্পোট প্রকাশের পর তারা তদন্তে নেমেছেন।
এ বিষয়ে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীণ প্রধান শিক্ষক মো. ফকরুল আলম বলেন, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনের জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্থানীয় বিএনপির নেতারা সভাপতি পদে সবুর খানের নাম প্রস্তাব করেন। ফলে তাকে এক নম্বরে রেখে তিনজন প্রার্থীর তালিকা ইউএনও অফিসে জমা দেওয়া হয়। তালিকার সাথে সবুর খানের দেওয়া একটি জীবন বৃত্তান্ত দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি বিএ পাস বলে উল্লেখ করেন। সময় স্বল্পতা এবং ব্যস্ততার কারণে তার দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করার সুযোগ আমাদের হয়নি। পরে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ সবুর খানকে কমিটির সভাপতি করে আমাদের চিঠি দেয়।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.