নিজস্ব প্রতিবেদক// বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া ইউনিয়নে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে উচ্ছেদ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ১০টি পরিবার।
বিরোধপূর্ণ ২৯ নম্বর মৌজার ৬১ নম্বর জে.এল.-এর একাধিক খতিয়ানের ৯১ শতাংশ জমির মালিকানা দাবি করছে দুটি পক্ষ। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকা পরিবারগুলো প্রায় দেড় যুগ আগে পাশ্ববর্তী গোবিন্দপুর ইউনিয়নে নদীভাঙনে গৃহহারা হয়ে এখানে এসে প্রয়াত আমির হোসেন ওরফে আলী হোসেন বেপারির কাছ থেকে ৯০ শতাংশ জমি স্ট্যাম্পে বায়নাপত্র চুক্তির মাধ্যমে ক্রয় করে বসতি স্থাপন করেন।
বায়নাপত্র করার কিছুদিন পর জমির দাতা আমির হোসেন ওরফে আলী হোসেন বেপারি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি ক্রেতাদের ডেকে বলেন, “আমি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাচ্ছি, ফিরে এসে তোমাদেরকে সাবকল দলিল সম্পাদন করে দেব।” কিন্তু দুঃখজনকভাবে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ঘটনার কয়েক বছর পর জমির মালিকের ছেলে ও নাতিরা ওয়ারিশ সনদ নিয়ে গোপনে এলাকার জানে আলম ওরফে জাহাঙ্গীরের কাছে সম্পূর্ণ জমি বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে জানে আলম সাবকল দলিল নিয়ে বায়নাপত্রধারীদের উচ্ছেদের হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী আব্দুল খালেক মাঝি, লতিফ দেওয়ান, মফিজল রাঢ়ী, জয়নাল হাওলাদার, শফিজল হাওলাদার ও লিয়াকত আলী হাওলাদাররা জানান, “আমরা নদীভাঙনে নিঃস্ব হয়ে ধারদেনা করে আমির হোসেন ওরফে আলী হোসেন বেপারির কাছ থেকে বায়নাপত্রের মাধ্যমে জমি কিনে বসতি গড়েছি। আমাদের বায়নাপত্রে প্রয়াত আমির হোসেনের ছেলে আলী আন্তাজ বেপারি, জাহাঙ্গীর বেপারি ওরফে আকবর হোসেন, এবং নাতি কামাল বেপারি সাক্ষী ছিলেন। তারা আমাদের কিছু না জানিয়ে গোপনে জমি বিক্রি করেছেন।
তাদের অভিযোগ, জানে আলম ওরফে জাহাঙ্গীর জেনেশুনে গোপনে দলিল করে পরে অতিরিক্ত মূল্যে জমি তাদের কাছেই পুনরায় বিক্রির প্রস্তাব দেন। “আমরা যেহেতু পুরো টাকা পরিশোধ করেছি, তাই আমরাই প্রকৃত মালিক। জানে আলম ও মালিকপক্ষ আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, আমরা এর বিচার চাই,” বলেন ভুক্তভোগীরা।
আরেক ভুক্তভোগী নিলুফা বেগম জানান, “আমার স্বামী কাঞ্চন মোল্লা মারা গেছেন ৯ মাস আগে। আমরা আমাদের জমিতেই তাকে দাফন করেছি। কিন্তু জানে আলম ওরফে জাহাঙ্গীর ওই কবরস্থান নিজের দাবি করে কবর থেকে লাশ তুলে অন্যত্র দাফনের হুমকি দিচ্ছেন। কবরের বেড়া ভেঙে ফেলেছেন। আমরা এখন কোথায় যাব? আমাদের বিকল্প জমি নেই।
অভিযুক্ত জানে আলম ওরফে জাহাঙ্গীর বলেন, “তাদের দলিল করার জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দলিল না করায় মালিকপক্ষ আমার কাছে জমি বিক্রি করেছে।”
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- মোঃ অনিক। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪২৩৫৩২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৮৯-শিকদার ভবন, পোর্ট রোড ভুমি অফিসের বিপরীতে, বরিশাল -৮২০০।
ই-মেইল: barishalcrimetrace@gmail.com
Copyright © 2025 Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস. All rights reserved.