
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) পূবাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিরুল ইসলামের (মুরাদ) বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। ফেসবুকে করা ওই মন্তব্যকে ‘ধৃষ্টতা ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলাভঙ্গ’ হিসেবে উল্লেখ করে জামায়াতের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, ওসি মুরাদ একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নেন। সম্প্রতি তিনি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমানের একটি বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নিজের ফেসবুকে লেখেন— ‘জামায়াতের লোকেরা স্বাধীনতাবিরোধী, তাদের রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না, সেটার জন্য গণভোট হওয়া উচিত।
এই মন্তব্যের স্ক্রিনশট ও ভিডিও প্রমাণসহ গত ২০ অক্টোবর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার জাহিদুল হাসানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পূবাইল থানা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামীম হোসেন মৃধা এবং মহানগর মজলিসে শুরা সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আমজাদ হোসেন খান।
অভিযোগকারীরা উল্লেখ করেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও ওসি আমিরুল ইসলাম রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, যা প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ হতে পারে। এ অবস্থায় তারা ওসির শুধু বদলি নয়, তার দৃষ্টান্তমূলক বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানান।
পূবাইল থানা জামায়াতের আমির আশরাফ আলী কাজল বলেন, আমিরে জামায়াতের বক্তব্য নিয়ে ওসির এমন প্রকাশ্য রাজনৈতিক মন্তব্য পূবাইলবাসীকে ক্ষুব্ধ করেছে। সরকারি দায়িত্বে থেকে তিনি এমন বক্তব্য দিতে পারেন না।এই অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত ওসি আমিরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (ভারপ্রাপ্ত) কমিশনার জাহিদুল হাসান অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। একজন এডিসিকে (অতিরিক্ত উপ-কমিশনার) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার এমন মন্তব্যে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল এবং নাগরিক সমাজে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সরকারি কর্মকর্তার এমন প্রকাশ্য রাজনৈতিক মন্তব্য সরাসরি প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। তারা এই ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা উদঘাটনের দাবি তুলেছেন।