1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
দুই দশকেও হয়নি বরিশাল সিটি করপোরেশনের আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা : নদীতে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

দুই দশকেও হয়নি বরিশাল সিটি করপোরেশনের আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা : নদীতে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

বরিশাল ক্রাইম ট্রেস ডটকম ডেস্ক : দুই দশক পেরিয়ে গেলেও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেনি বরিশাল সিটি করপোরেশন। ৫৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ মহানগরীতে গত দুই দশকে জনসংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ, কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চিত্র রয়ে গেছে আগের মতোই। বর্তমানে ৩০টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন উৎপন্ন হচ্ছে প্রায় ২০০ টন বর্জ্য, যা ফেলা হচ্ছে ৩নং ওয়ার্ডের পুরানপাড়া এলাকার উন্মুক্ত ভাগাড়ে নগরবাসীর জন্য যা এখন এক মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে।

 

এ অবস্থা শুধু বরিশাল সিটি করপোরেশনের নয় গোটা বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ২৬টি পৌরসভাতেও নেই আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো ব্যবস্থা। ফলে প্রতিদিন বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণু, আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি।

 

 

বসবাসই এখন বিষাদ

বরিশাল শহরের পুরানপাড়া এলাকায় সাত সদস্যের পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন হামিদা বেগম। তার পরিবারে চার শিশু ও আরও দুই প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যই হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত। ডায়রিয়ার মতো রোগও নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

হামিদা বেগম বলেন,

১০ বছর আগে কম দামে জমি কিনে এখানে বাড়ি করেছি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পরিবারের সবাই শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করে। এখন প্রায় প্রতিমাসেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। বাড়ি বিক্রি করতে চাইলেও কিনতে কেউ চায় না, তাই বাধ্য হয়েই থাকতে হচ্ছে।

 

শনিবার (২৫ অক্টোবর) সরেজমিনে ডাম্পিং স্টেশনের আশপাশের পুরানপাড়া, সরদারকান্দা, রাঢ়িমহল ও কাউনিয়া হাউজিং এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের সবার অভিযোগ একই জনবসতির মাঝে এ খোলা ময়লার ভাগাড় তাদের জীবনকে যন্ত্রণাময় করে তুলেছে।

আরেক বাসিন্দা লিপি আক্তার বলেন, ‘ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছি, লিখিত আবেদনও দিয়েছি কিন্তু কোনো ফল হয়নি।’

নদীতে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য

দেড় যুগ আগে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পাওয়া ঝালকাঠি পৌরসভাতেও নেই ডাম্পিং স্টেশন। বরং পৌর কর্তৃপক্ষ সুগন্ধা ও বাসণ্ডা নদীকে ময়লার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করছে। এতে নদীর পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে রোগজীবাণু।

উন্নয়নকর্মী মাহাবুব হোসেন সৈকত বলেন, নদীতে ফেলা প্লাস্টিক ও অন্যান্য আবর্জনা মাছ খেয়ে ফেলে, সেই মাছের মাধ্যমে বিষক্রিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। আগের মতো সুগন্ধার মাছের স্বাদও এখন আর নেই।”

তবে সমস্যার কথা স্বীকার করে ঝালকাঠি পৌর প্রশাসক মো. কাওছার হোসেন বলেন, ‘ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই একটি আধুনিক ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’

পিরোজপুরেও একই অবস্থা

নানা সংকটে দুই বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে পিরোজপুর পৌরসভার একমাত্র ডাম্পিং স্টেশন। উপকূলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (CITEIP)-এর আওতায় ২০২২ সালে ৪ একর জমির ওপর স্থাপিত স্টেশনটি উদ্বোধনের পরও এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। ফলে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন আসেনি।

পরিবেশবিদদের উদ্বেগ

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন বলেন, ‘ময়লার ভাগাড় নিয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা আশ্বাস দেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।’

সিটি করপোরেশনের দাবি

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সচিব রুপ্পা সিকদার বলেন, ‘নতুন ডাম্পিং স্টেশন তৈরির জন্য উপযুক্ত স্থান খোঁজা হচ্ছে। প্রশাসক মহোদয় কোরিয়ার একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলেছেন, সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। এ ছাড়া বর্তমান ভাগাড় থেকে যাতে বর্জ্য বাইরে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে এবং আশপাশের সড়ক সংস্কারের কাজও চলছে।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network