
অনলাইন ডেস্ক//সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ২০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে দিন-দুপুরে ৩২ বিঘা পুকুরের মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে আমিনুর রহমান টুটুল নামে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
এ বিষয়ে গত ১৮ জুলাই আব্দুস সালাম নামে এক ভুক্তভোগী থানা ও ২৩ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নিমগাছী আর্মি ক্যাম্পে অনুলিপি প্রেরণ করেছেন।
অভিযোগকারী আব্দুস সালাম সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের বাহিরগোলা এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় মাছ ব্যবসায়ী।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিমগাছী সমাজভিত্তিক মৎস্যচাষ প্রকল্পের আওতাধীন উপজেলার মাধাইনগর সংঘই পাড়া গ্রামের ৩২ বিঘা ‘সংঘই দিঘী পুকুর’ সুফল ভোগীদের কাছ থেকে সাবলিজ নেন আব্দুস সালাম। যার মেয়াদ রয়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। কিন্তু সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান টুটুল তার লোক দিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ চাঁদা প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে মাছ চাষ করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়।
পরে সুফলভোগী ও স্থানীয়দের বিষয়টি জানালেও কোনো সমাধান মেলেনি। পরে গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ভোর ৫ টার দিকে পূর্বপরিকল্পিত ও বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে পুকুরে জাল ফেলে মাছ লুট করে। এতে পুকুরের পাহারাদার আব্দুল খালেক ও স্থানীয় শহিদুল ইসলাম বাঁধা দিলে মারধর, গুম ও খুনের হুমকি দেয়। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ এর পরামর্শে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ সুযোগে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে আবারও জাল ফেলে মাছ লুট করে তারা। এভাবে দুই দফায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ লুট করা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে বলেন, বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান টুটুলের নেতৃত্বে অন্তত ১৬ জন লোক দুই দফায় জাল ফেলে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়েছে। এর আগে ওই বিএনপি নেতা তার চাচাতো ভাই শামীম হোসেনকে দিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। মূলত সেটা দিতে অস্বীকার করায় তারা আমার সাব-লিজ নেয়া পুকুরের প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ লুট করেছে।
তবে চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান টুটল বলেন, ‘সুফলভোগীদের কাছ থেকে সাবলিজ নেওয়া ওই পুকুরের মনে হয় মেয়াদ নেই। ২০২৭ সাল পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে। এমন জবাবের উত্তরে তিনি বলেন, মেয়াদ থাকার কথা না। তবে মেয়াদ না থাকায় কে বা কারা ওই পুকুরের মাছ মেরে নিয়েছে সেটা আমার জানা নেই।’
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে সেটার সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, ‘এ ঘটনায় একজন ভুক্তভোগী ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।”