1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
হঠাৎ উত্তপ্ত বরিশাল ৩ আসনে : আইনজীবীদের ‘টাউট-বাটপার’ বললেন বিতর্কিত সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৩ পূর্বাহ্ন

হঠাৎ উত্তপ্ত বরিশাল ৩ আসনে : আইনজীবীদের ‘টাউট-বাটপার’ বললেন বিতর্কিত সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫
সাইফুল ইসলাম , বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি: বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে বিএনপির অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে উত্তাপ ছড়ানো দ্বন্দ্ব। হঠাৎ উত্তপ্ত ছড়াচ্ছে বরিশাল- ৩ আসনে। মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে কথার বাগযুদ্ধ চলছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখে।
বিএনপির প্রার্থী তালিকার ঘোষণায় বরিশালের ছয়টি আসনের মধ্যে বরিশাল-৩ আসন শূন্য রাখা হয়েছে। প্রভাবশালী প্রার্থীদের উপস্থিতির কারণে বরিশাল-৩ আসনের মনোনয়ন আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে এমনটি শোনা যাচ্ছে । দলটির শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনায় রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান ও ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
এমন প্রেক্ষাপটে বরিশালের বাবুগঞ্জে নারী সমাবেশে আইনজীবীদের ‘টাউট-বাটপার’ বলে মন্তব্য করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ (বরিশাল-৪) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপি নেতা মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ।
গত ৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতেদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির একাংশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত নারী সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। ওই সময় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান।
বক্তৃতার এক পর্যায়ে মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ বলেন, “ওকালতি যারা করেন তারা কিন্তু টাউট-বাটপার হয়।”তার এই মন্তব্যে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং পরে বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি ইতোমধ্যে সারাদেশে ২৩৭টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। তবে বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন। অপরদিকে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট নেতা—কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও আরেক প্রার্থী রহমান মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন।
সমাবেশে বক্তব্যের সময় মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ পরোক্ষভাবে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনকে উদ্দেশ্য করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার একটি উদ্ধৃতি টেনে বলেন, “জয়নুল আবেদীনকে চতুর্থবারের মতো বহিষ্কার করবেন বেগম খালেদা জিয়া।
তার এই বক্তব্যে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
বাবুগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রকিবুল হাসান খান রাকিব বলেন, একজন সাবেক সংসদ সদস্যের মুখে দেশের সম্মানিত পেশা আইনজীবীদের নিয়ে এমন আপত্তিকর মন্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ খান বলেন,“বরিশাল-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে যিনি মনোনয়ন পাবেন, আমরা তাঁর পক্ষেই থাকব। কিন্তু একজন সাবেক এমপি হয়ে মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের এমন মন্তব্য দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তিনি সারা দেশের আইনজীবীদের কটাক্ষ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি তিনি যেন প্রকাশ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চান, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।
এ বিষয়ে মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ তার ফেসবুক পোস্টে এ ঘটনাকে নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তাতে তিনি লিখেছেন, বুধবার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠানে আমি অংশগ্রহণ করি। সেখানে আমার বক্তব্যে আমি ২০ বছর আগে অ্যাডভোকেট স. ম. রেজাউল করিম আমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন  সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ভুলবশত “অ্যাডভোকেট” শব্দটি ব্যবহার করে ফেলি। আমি সমাজের আইনজীবী সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি। আইনজীবীদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও সম্মান রয়েছে। তবুও, যদি আমার ওই বক্তব্যে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন, তবে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
বরিশাল -৩ আসন বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার মনোনয়নকে কেন্দ্র করে  স্থানীয় নেতাকর্মীরা কার্যত দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ সেলিমার অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্যে আস্থা রাখছেন, আবার কেউ ভরসা করছেন জয়নুল আবেদীনে।
এই দুই হেভিওয়েট নেতার প্রতিযোগিতায় স্থানীয় বিএনপির মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। একাধিকবার দেখা গেছে একই দিনে একই এলাকায় পৃথক কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। ফলে সাধারণ কর্মীরা বিভ্রান্ত—কাকে অনুসরণ করবেন?
সেলিমাপন্থীরা মনে করেন, তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা এবং পারিবারিক ঐতিহ্য মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে জয়নুলপন্থীরা বলছেন, গতবারের প্রার্থী হওয়া, তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণ ও দলের আইনি সংগ্রামে নেতৃত্বের কারণে জয়নুলই মনোনয়নের জন্য সবচেয়ে যোগ্য।
বরিশাল-৩ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিমা রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আসলে আমার বলার তেমন কিছু নেই। দল যাঁকে চূড়ান্ত করবে, আমরা তাঁকেই সবাই মেনে নেব। হয়তো তাঁরা চিন্তাভাবনা করছেন। আমরা যেহেতু দুজনই সিনিয়র, তাই একটু সময় নিচ্ছে।
মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। তাই সব সময়ই আমরা আশাবাদী। আশাবাদী না হলে রাজনীতির মধ্য দিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণ করা যায় না।
অপরদিকে, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন বুধবার ঢাকায় বসে তার অনুসারী বাবুগঞ্জের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় কালে বলেন, “বরিশাল-৩ আসন নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত নয়। নীতিনির্ধারকরা মাঠপর্যায়ের রিপোর্ট ও তৃণমূলের মতামত বিশ্লেষণ করছেন। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল, তাই পর্যালোচনা শেষ হলেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেলিমা রহমান এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। জয়নুল আবেদীন হয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। কিন্তু তারা কেহই বিজয়ী হতে পারেননি।
বিএনপি গত সোমবার জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। তবে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network