
নিজস্ব প্রতিবেদক : জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও ষড়যন্ত্র থেমে যায়নি। আগামী নির্বাচন শুধু দেশের জন্য নয়, ইসলামী আন্দোলনের জন্যও চ্যালেঞ্জ স্বরূপ।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ময়ূরকুঞ্জ কনভেনশন সেন্টারে সংসদীয় আসন সিলেট-৪, ৫ ও ৬ নম্বর আসনের জামায়াতের ভোটকেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথাগুলো বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জনগণ পরিবর্তন দেখতে চায়। এই পরিবর্তন সাধনে জামায়াত গণপ্রত্যাশা পূরণ করবে। শুধু তাই নয়, জনগণের রায়ে জামায়াত দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতি ইসলামের নেয়ামতসমূহ ভোগ করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে অনেক বাধা আসতে পারে। কিন্তু বাধা দেখলে ঘাবড়ালে চলবে না। কারণ আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করেই সামনে এগিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘জাতির বৃহত্তর প্রয়োজনে আসন সমঝোতায় জামায়াত ছাড় দেবে। দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে। সেজন্য সব দায়িত্বশীলকে ত্যাগের মানসিকতা লালন করতে হবে।
আমিরে জামায়াত বলেন, ‘অতীতের শাসকবর্গ দুর্নীতি, লুটপাট ও জনগণের সম্পদ শোষণ করলেও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য কাজ করেনি। অথচ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আমাদের দুই মন্ত্রী সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দুর্নীতি তাদের স্পর্শ করতে পারেনি।
ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। আল্লাহর ওপর ভরসা করে সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ দেশ ও ইসলামের জন্য শহীদ হয়েছেন। কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। আল্লাহ তাদের শাহাদাত কবুল করুন। আমীন।
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে আবেগী বক্তব্য পরিহার করতে হবে। সময়কে কাজে লাগাতে হবে। বিতর্ক এড়িয়ে চলতে হবে। রাজনৈতিক সমালোচনা দেখে বিচলিত হওয়া যাবে না। কেউ কোনো ভুল করে থাকলে নিঃসংকোচে সরি বলুন। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে সব ক্ষেত্রে বিনয়ী হতে হবে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জনগণ যদি উপযুক্ত লোককে ভোট দিয়ে নির্বাচন করে তাহলেই জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। আমাদের সবাইকে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্তের ওপরই জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।’
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির ওপর জোর দিয়ে এ সময় তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, জেলা আমির ও সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাশুক আহমদের সঞ্চালনায় আমানুল্লাহ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির ও সিলেট-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।
বক্তব্য দেন জেলা নায়েবে আমীর ও সিলেট-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, জেলা নায়েবে আমীর ও সিলেট-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফিজ মাওলানা আনওয়ার হোসাইন খান, মহানগর নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, জেলা সেক্রেটারী ও সিলেট-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাবেক জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সিলেট-৩ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ প্রমুখ।