1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে যাচ্ছে বরিশালের পেয়ারা - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন

পর্যটন শিল্পেও আশা জাগাচ্ছে পেয়ারা বাগান ও ভাসমান হাট

দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে যাচ্ছে বরিশালের পেয়ারা

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রচুর ভিটামিন সি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জনপ্রিয় ফল ‘পেয়ারা’র রাজধানী বরিশাল’ উৎপাদন বছরে ৪০ হাজার টন অতিক্রম করতে যাচ্ছে। বছরে প্রায় পৌনে ২শ’ কোটি টাকার পেয়ারার বাজার তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে। এমনকি বরিশালের পেয়ারা’র বাজার ইতোমধ্যে সারা দেশে সম্প্রসারিত হবার পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিকভাবে তা সীমান্ত অতিক্রম করে পাশর্^বর্তী দেশের আগরতলা, শিলং, জলপাইগুড়ি, নিউ জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং বনগাঁওসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাল দাম পেয়ে বরিশালের কৃষিযোদ্ধাগণও পেয়ারা আবাদে আরো আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের দায়িত্বশীল মহল।

 

চলতি মৌসুমে খোলা বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দলেও বিক্রি হচ্ছে। বাগান পর্যায়ে অবশ্য উৎপাদকগণ ৪০ টাকার বেশি দাম পাচ্ছেন না। পাইকারী হাটে এসে তা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

এমনকি পেয়ারা বিপননে আটঘর কুড়িয়ানা ও ভিমরুলী এলাকায় বিশাল ভাসমান পেয়ারার হাট ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের অর্থনীতির বিশাল চালিকা শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। শুধু পেয়ারা বেঁচাকেনাই নয়, এ ভাসমান হাট ও পেয়ারার বাগান দেখতেও প্রতিদিন সারাদেশের বিপুল সংখ্যক পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে আটঘর কুড়িয়ানা ও ভিমরুলী এলাকা। ফলে পেয়ারা উৎপাদন ও বিপননকে ঘিরে পর্যটন শিল্পও নতুন হাতছানি দিচ্ছে এ এলাকায়। এসব পর্যটকদের কাছে বরিশাল একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকগণ বরিশালে পৌঁছে এখান থেকে পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা হাট দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।

 

এমনকি ‘মকুন্দপুরি’ সহ সনাতন জাতের পেয়ারার সাথে আমাদের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান-‘বারি’ উদ্ভাবিত ‘কাজী পেয়ারা’, বারি পেয়ারা-২’,‘বারি পেয়ারা-৩’, বীজ বিহীন ‘বারি পেয়ারা-৪’ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত ‘বাউ পেয়ারা-১’ থেকে বাউ পেয়ারা-৯’ এবং ‘থাই পেয়ারা-৫’ ও ‘থাই পেয়ারা-৭’ নামের উন্নতমানের সুমিষ্ট পেয়ার আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ ১০ হাজার একর অতিক্রম করেছে।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর-ডিএই’র মতে দেশে বর্তমানে যে প্রায় ৪০ হাজার একরে পেয়ারার আবাদ হচ্ছে, এককভাবে বরিশালেই তার অবদান প্রায় ১০ সহস্রাধিক একর। প্রতিবছরই এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ ও উৎপাদন বাড়ছে। এমনকি গত কয়েকটি বছর ধরে কাজী পেয়ারা ও থাই পেয়রার আবাদ সম্প্রসারণে এক ধরনের নিরব বিপ্লব ঘটে গেছে এ অঞ্চলে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর-ডিএই’র বরিশালে ইসাকাঠী ও রহমতপুরে হর্টিকালচার নর্সারী ছাড়াও লেবখালী নার্সারী থেকে সব সময়ই উন্নত জাত ও মানের পেয়ারার চারা সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।

 

পেয়ারা মূলত গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও কৃষি বিজ্ঞানের কল্যাণে এখন তা সারা বছরই উৎপাদন হচ্ছে। এমনকি সরাসরি ফল হিসেবে খাবার পাশাপাশি পেয়ারার সাহায্যে এখন জ্যাম ও জেলি ছাড়াও জুস পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে সারা বিশ্বে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষাধিক হেক্টর জমিতে বছরে ২৫ লক্ষাধিক টন বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদন হলেও এ অঞ্চলে আজ পর্যন্ত কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠেনি।

 

অথচ এ অঞ্চলে উৎপাদিত প্রায় ৩০ হাজার টন আমড়া ও ৩০ হাজার টন পেয়ারা’র সাথে পৌনে ৪ লাখ টন ইলিশ মাছ নিয়ে একটি ইপিজেড বা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকগণ। এছাড়াও প্রায় ১৪ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত বরিশাল কৃষি অঞ্চলে যে প্রায় ১৭ লাখ টন সবজি উৎপাদন হচ্ছে, তারও অনেকগুলোই প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে রফতানির সুযোগ রয়েছে। তবে বিশে^র যে শতাধিক দেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রফতানি হচ্ছে, সেখানের বরিশালের সবজিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

 

উর্বর বেলে দো-আঁশ মাটিতে পেয়ারা আবাদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন কৃষিবীদগণ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেয়ারার চারা বা কলম রোপণের উপযুক্ত সময়। চারা থেকে চারার দুরত্ব ৪ মিটার এবং ৩ মিটার দুরত্বের লাইনে পেয়ারা চারা রোপণ অত্যন্ত আদর্শ ও উপযুক্ত বলে মনে করছেন কৃষিবীদগণ। রোপণের আগে ৫০ সেন্টিমিটার বা দেড়হাত দৈর্ঘ্য প্রস্থ ও গভীর গর্ত করে সেখানে ১৫ থেকে ২০ কেজি গোবর, ১-২ কেজি পঁচা খৈল এবং ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৭৫-১০০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করে গর্ত বুজিয়ে ১৫-২০ দিন পরে সেখানে চারা রোপণের পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবীদগণ। মাটিতে রসের অভাব হলে খড়ার সময় ২ থেকে ৩ বার সেচ প্রয়োগ করতে হবে।

 

পেয়ারার ভাল ফলন পেতে গাছের অঙ্গ ছাঁটাই, ডাল নুয়ে দেয়া, ফল পাতলাকরণ এবং ফল ঢেকে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন কৃষিবীদগণ। পাশাপাশি সুষ্ঠু সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করারও তাগিদ দিয়েছেন কৃষিবীদগণ।

 

পেয়ারা’র বাগান ও গাছে ‘এ্যানথ্রাকনোজ’, ‘উইল্ট বা ঢলে পড়া’ রোগ ছাড়াও ‘সাদা মাছি পোকা’র আক্রমন অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব বালাই থেকে পেয়ারা ফল ও গাছকে রক্ষায় আক্রান্ত পাতা ও ডগা ছাটাই করে ধ্বংশ করা ছাড়াও ‘ইমিডা ক্লোপ্রিড’ গ্রপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে ১০ দিন অন্তর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করারও পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবীদগণ।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network