
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে অপসো স্যালাইন লিমিটেড কারখানার ৫৭০ জন শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকেরা।
আজ শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নগরের চৌমাথা এলাকার মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
আজ বেলা পৌনে তিনটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলছিল।
এর আগে আজ সকাল থেকে নগরের জীবনানন্দ দাশ (বগুড়া সড়ক) সড়কে অবস্থিত অপসো স্যালাইন কারখানার সামনে জড়ো হন শ্রমিকেরা। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা নগরের চৌমাথা এলাকায় অবরোধ শুরু করেন। সেখানে তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানান বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী, বিএনপির বরিশাল নগর কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
শ্রমিকেরা জানায়, গত ২৯ অক্টোবর ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই তাঁরা লাগাতার বিক্ষোভ-সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি, সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল শুক্রবার কারখানাটির সামনে তাঁরা সংহতি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কিন্তু মালিকপক্ষ তাঁদের কাজে ফিরিয়ে নিচ্ছে না। তাই এবার বরিশালের অন্য শ্রমিকেরাও সংহতি জানিয়ে তাঁদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
অপসো স্যালাইন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিব মিয়া বলেন, স্টুরিপ্যাক (সিরিঞ্জ ও স্যালাইন সেট প্রস্তুতকারক) শাখার সব শ্রমিককে প্রথমে চার দিনের মৌখিক ছুটি দেওয়া হয়। এরপর ২৯ অক্টোবর শ্রমিকদের বাড়িতে ডাকযোগে চাকরিচ্যুতির নোটিশ পৌঁছায়। আমরা ১৮ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।
শুধু ট্রেড ইউনিয়ন করার কারণে ওই শ্রমিকদের অপসারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মনীষা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এসব শ্রমিককে বিনা নোটিশে কারখানা থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে—এটা অন্যায়, অমানবিক। আজ তাঁরা কাজ হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসেছেন, ঘরে খাবার নেই।
এদিকে মহাসড়ক অবরোধের কারণে বরিশালের সঙ্গে পাঁচ জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। মহাসড়কের দুই প্রান্তে অসংখ্য যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়েছে। সাকুরা বাসের যাত্রী আলী হোসেন বলেন, ‘সকালে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে রওনা হয়েছি। বরিশালে এসে আটকা পড়েছি। জানি না কখন এই অবরোধ শেষ হবে, আর কখন পৌঁছাতে পারব।
২৯ অক্টোবর কারখানাটির স্টুরিপ্যাক শাখার ৫৭০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুতির নোটিশ দেওয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কোম্পানির নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে স্টুরিপ্যাক শাখার উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।