
নিজস্ব প্রতিবেদক : অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বিক্রি হয় শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা। তবে এটি প্রচলিত কোনো বাজার নয় এখানে একেকটি নৌকা যেনো হয়ে ওঠে একেকটি দোকান নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কোনো ভাসমান হাটের কথা বলছি।
প্রায় ২’শত বছরের পুরোনো দেশের বৃহত্তম এই ভাসমান বাজারটি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা বেলুয়া নদীর মোহনায় অবস্থিত। আর ঐতিহ্যবাহী এই বাজারের একটি অংশ হলো শাওলার দোকানগুলো। প্রতি সপ্তাহে শনি-মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটর সঙ্গে সঙ্গে নদীর বুক চিরে ফুটে ওঠে হাট।
সম্প্রতি সরেজমিন বেলুয়া নদীর ভাসমান বাজারে গেলে জানাযায়, এই বাজারেরই আসে পাশে থেকে সংগ্রহ করা হয় এই শাওলা শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা। তারপর এগুলো বিক্রির জন্য নৌকায় করে আনা হয় এই ভাসমান হাটে। অবাক করার কান্ড হলো এগুলো বিক্রিও হয় বেশ ভালো দামে।
স্থানীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার একটি অংশ সারাবছর পানির নিচে ডুবে থাকে। তাই এখানে চাষাবাদের একমাত্র ভরসা হলো ভাসমান পদদ্ধিতে আর এগুলো ব্যবহার করা হয় ভাসমান কৃষি কাজে। ভাসমান পদ্ধতিতে এই সব শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা দিয়ে তৈরি হয় বেড এরপর সেসব বেডে রোপণ করা হয় সবজি চারা। এছাড়া বিক্রি হওয়া ট্যাপা, পেনা, শাওলা পেচিয়ে তৈরি করা হয় ম্যাদা সেসব ম্যাদাতেই চারা জন্মানোর জন্য রোপন করা হয় বীজ। আর এভাবেই শাওলা বিক্রি করছেন এখানকার লোকজন।
ট্যাপপনা বিক্রি করতে আসা জুলফিকর নামের একজন জানান, শুক্রবরা সকালে আমার নৌকাটি বোঝাই করেছি যুগিয়া এলাকা থেকে। রাতে বাড়ি থেকে হাটে রওনা দিয়ে ভোর পৌছাইছি। আমার নৌকা ২৫০০/= টাকা চেয়েছি বিক্রি করেছি ১৮০০/= টাকায় আমার বাড়ি বিশারকান্দি এলাকায়। আমি সারাবছর এই ব্যবসা করি। বছর শেষে কিছু টাকা জমাও রাখতে পারি। এ ব্যবসায় কোনো চালান লাগে না। এক নৌকা থেকে অন্য নৌকায় শ্যাওলা নিচ্ছে কবির শেখ জানতে চাইলে তিনি জানান, ২০০/= টাকা আটি কিনেছে তিনি। নিয়ে যাবে সোনাপুর গ্রামে তিনিও বিক্রি করবেন। এক নৌকা কিনে গ্রামে গ্রামে বিক্রি করবেন তিনি তাতে ভালো লাভ হবে। স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, চারা চাষে শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা প্রয়োজন এগুলো ছাড়া চারা বানানো যায় না। এগুলো যেনো এ অঞ্চলের স্বর্ণ অনেকে এগুলো বিক্রি করে বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে।
নাজিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রাসারণ কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান মিল্টন জানান, অবিশ্বাস্য হলেও সত্য শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা দিয়ে বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করছে কৃষরেকরা। এগুলোর গুনাগুন অনেক যা জৈব সার হিসাবেও চাষিরা ব্যবহার করে থাকে। এই উপদান গুলোর কারণে প্লাবিত এ অঞ্চলের চারার মান ভালো যার চাহিদা দেশ জুড়ে।