
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: দিনে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মিছিলকারী স্থানীয় যুবদল নেতা মামুন রাতে ডাকাতি করতে গিয়ে আটক হয়েছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর এই ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। ওই যুবদল নেতার নাম মামুন হোসেন (৩৮)। কুমারখালী জিয়া মঞ্চের নেতা রাকিবের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে গত ২৪ জুলাই বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি।
পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড যুব জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শোভনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। এই মিছিলের সামনে ব্যানার ধরে থাকা যুবদল নেতা মামুন হোসেন ওই রাতেই উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরশেদপুর এসবিসি ইটভাটায় নৈশপ্রহরী লেন্টু শেখের মাথার আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতি করে। ডাকাত দল ইটভাটার একটি ট্রাক্টরের ইঞ্জিনসহ সামনের অংশ এবং অন্য একটি ট্রাক্টরের ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায়। ট্রাক্টরের ইঞ্জিন ও ব্যাটারির বাজারমূল্য প্রায় ১৬ লাখ ১২ হাজার টাকা বলে জানা যায়।
সোস্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে দেখা যায়- পুলিশের সাথে থানায় হাতকড়া অবস্থায় থাকা এবং প্রতিবাদ মিছিলে অগ্রভাগের নেতৃত্ব দেয়ার ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় হয়েছে ভাইরাল। কুমারখালীর স্থানীয় বিএনপির নেতারা এ নিয়ে রয়েছেন বিব্রত ও অস্বস্তিতে। কুমারখালী থানা পুলিশ গত রোববার ২৭ জ্লুাই যুবদল নেতা মামুন ও অপর ডাকাত মো: রমজানকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। মামুন হোসেন নন্দলালপুর ইউনিয়নের বুজরুক বাঁখই গ্রামের মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামানের ছেলে। তিনি গত কয়েক বছর সিঙ্গাপুর ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে যুবদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে মামুনকে সক্রিয় দেখা যায়।
জানা যায়, উপজেলা পর্যায়ের পদ পেতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। গত বছর নিজ গ্রামে রাতে এক এনজিও নারী কর্মীকে মাঠে নিয়ে ধর্ষণ মামলার আসামি হওয়ায় বিদেশে পাড়ি দিয়েছিল মামুন। সম্প্রতি এক নারীকে কুরবানীর গোস্ত চুরির অভিযোগ তুলে মামুন ঐ নারীকে নির্যাতন চালায়। এতে থানায় মামলা হলে আসামি ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করেন তিনি। তখন কুমারখালী থানায় পুলিশের উপর চড়াও হতে দেখা যায় তাকে। মামুনের বড় ভাই সুমনের বিরুদ্ধেও অস্ত্রবাজি-ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে।
কুমারখালী উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল হাসান রজন বলেন, মামুন যুবদলের কোনো নেতা না। জিয়া মঞ্চের উপজেলা আহ্বায়ক ইজারাদার রাকিবের আত্মীয় হওয়াই সে ঐদিন মিছিলে এসেছিল। উপজেলা বিএনপির ব্যানারে আয়োজিত মিছিলে মামুন কিভাবে সামনের সারিতে থাকে? এমন প্রশ্নের জবাবে রাজন কোনো উত্তর না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গ টানেন।
মামুনের গ্রামে সরেজমিনে গেলে একাধিক ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সে। কুজে নজরুলসহ ১০/১২ জনের চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে নিয়ে মামুন জমি দখল, শালিসের নামে চাঁদাবাজি, জোর করে গাছ, গরু-ছাগল, মাছ লুটের সাথে তারা জড়িত। অস্ত্রধারী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করে না।’