1. diggilseba@gmail.com : admin :
  2. ashadul@barisalcrimetrace.com : Ashadul Islam : আসাদুল ইসলাম
  3. hafiz@barisalcrimetrace.com : barisal CrimeTrace : barisal CrimeTrace
  4. mahadi@barisalcrimetrace.com : মাহাদী হাসান : মাহাদী হাসান
মিলারদের কারসাজির কারণেই চালের মূল্য বৃদ্ধি - Barisal Crime Trace । বরিশাল ক্রাইম ট্রেস
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন

মিলারদের কারসাজির কারণেই চালের মূল্য বৃদ্ধি

  • আপডেট সময় : বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক// মিলারদের কারসাজির কারণেই এ অবস্থা। বোরো মৌসুম শেষ হচ্ছে, তবে চালের দাম কমেনি বরং বেড়েছে কয়েক দফায়। অনেকে বলছেন ধানের ফলন ব্যয়ের কারণে এমনটা হয়েছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি চালের আড়ৎ ঘুরে দেখা যায়, আগের তুলনায় চালের দাম কমলেও তা একেবারেই নগণ্য। বাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে। আটাশের দাম কেজিপ্রতি ৬৫ টাকা। মধ্যম মানের নাজিরশাইল-মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে। ভালো মানের কাটারি নাজিরশাইল এবং মিনিকেটের কেজি ক্ষেত্র বিশেষে ৮৫-৯০ টাকা। বেশিরভাগ ৫০ কেজির চালের বস্তায় দাম বেড়েছে ৩৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত।

উত্তর বাড্ডার চালের আড়ৎ ঘুরে দেখা যায়, উচ্চ দরে বিক্রি হচ্ছে ডায়মন্ড, মোজাম্মেল, পালকি, রয়েল এবং রসিদ কোম্পানির চাল। বিক্রেতারা বলছেন, মিলারদের থেকে চাহিদা অনুযায়ী চাল পাচ্ছেন না তারা, কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে।
এপ্রিলের শেষদিক থেকে বোরো ধান সংগ্রহ শুরু হলেও এর প্রভাব পড়েনি বাজারে। জুন মাসে চালের দামে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১৫ শতাংশ। আগস্ট পর্যন্ত লাগাতার বোরো ধান সংগ্রহ চলবে, অনেক জেলার বোরো ধান সংগ্রহ শেষ। কিন্তু চালের বাজারের দৃশ্য আশাব্যঞ্জক না।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) জুলাই মাসের ইকোনমিক আপডেট অ্যান্ড আউটলুকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে অন্যান্য পণ্যের দাম কমায় মূল্যস্ফীতি কমে আসলেও চালের দাম কমেনি, বাড়তি চাপ যোগ করছে মূল্যস্ফীতিতে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টন, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১৬ লাখ টন বেশি। সে হিসাবে প্রতি হেক্টর জমিতে ৪.৪৬ টন ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি।
তবে জেলা পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর সার, সেচ এবং ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় বেড়েছে ধানের উৎপাদন খরচ। গত বছর যেখানে কেজিপ্রতি ধান উৎপাদনে খরচ পড়তো ২৫ টাকা সেখানে এবার এ খরচ ২৮-৩০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী এবং পিরোজপুর জেলার কৃষকরা বলছেন, এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধান উৎপাদনে যতটা না প্রভাব পড়েছে তার চেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সার ও সেচের খরচ বাড়ায়।

ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার তিমিরকাঠি গ্রামের কৃষক খোকন হাওলাদার বলেন, লিটারে ডিজেলের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। অন্যদিকে, সরকার নির্ধারিত দামে ডিলাররা সার বিক্রি করছেন না। বাড়তি দামে রসিদ ছাড়া বাধ্য হয়ে কৃষকদের সার কিনতে হয়েছে। তবে বাড়তি দামে সার কিনলেও মিলারদের কাছে ন্যায্য দাম মিলছে না।

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জের বাদলপাড়া এলাকার আরেক কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, মিলাররা নিজেদের মতো দর বেধে দিয়েছেন আর সেই দরেই ধান বিক্রি করতে হয়েছে। কোরবানির আগ পর্যন্ত কৃষকদের গোলায় ধান ছিল। তখন ধানের দাম স্বাভাবিক ছিল। কোরবানির পরে মিলারদের হাতে যখন ধান যাওয়া শুরু হলো তখনই দাম চড়া।

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার গৌরিপুরের কৃষক নেয়ামত আলি বলেন, অনেকেই ভাবেন চালের দাম বাড়লে কৃষক দাম ভালো পায়। কিন্তু এটা হয় না। আমরা কম দামে ধান বিক্রি করে বেশি দাম দিয়ে চাল কিনি। সারের ডিলার, সেচের খরচ, মিলারদের মজুতদারি- কোথাও কোনো নজরদারি নেই।

২৪ এপ্রিল থেকে বোরো ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে, চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এ বছর সরকার ৩৬ টাকা কেজি দরে ৩ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান এবং ৪৯ টাকা কেজি দরে ১৪ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমন ধানের ফলন খারাপ হতে পারে এমন শঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চার লাখ টন চাল কিনবে সরকার। এর বাইরে বেসরকারিভাবে আরও পাঁচ লাখ টন চাল কেনার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা।

সম্প্রতি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কম হওয়ায় বাজার স্থিতিশীল করতে চাল আমদানি করা হবে। সরকারি-বেসরকারি দুই উদ্যোগে চাল আমদানি করা হলে দাম এমনিতেই কমে আসবে।

তবে চালের দাম কমাতে আমদানি কোনো সমাধান হতে পারে না বলে মনে করে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংগঠনটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী চাল আমদানি করেন না। গত বছরেও দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চাল আমদানির কোনো আগ্রহ নেই। এর প্রধান কারণ ব্যবসায়ীদের হাতে চাল আছে, সেটিই তারা উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে চান। কেন ব্যবসায়ীরা অনুমতি পাওয়ার পরেও ঋণপত্র (এলসি) খুলে চাল আমদানি করছেন না সেটি কোনোবারেই নজরদারির আওতায় আসে না।

কৃষি গবেষকদের মতে ধান উৎপাদন থেকে শুরু করে চাল বিক্রির প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারি বাড়াতে পারলে, মজুতদার অসাধু মিল মালিকদের সাজা নিশ্চিত হলে এবং নানা অপকর্মের মাধ্যমে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির পাঁয়তারা নস্যাৎ করে দেওয়া গেলে দেশে প্রতি মৌসুমে যে ধান উৎপাদন করা হয় তা দিয়েই চালের বাজার স্বাভাবিক রাখা সম্ভব বলে মনে করেন সংগঠনটির এই সদস্য।

পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরও নিউজ
© All rights reserved © 2025 Barisal Crime Trace
Theme Customized By Engineer BD Network