
নিজস্ব প্রতিবেদক // চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও কর্মস্থলে নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
রোববার (১৭ আগষ্ট) বিকেল ৩টার পর থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। রাতে শেবাচিম হাসপাতালের মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
চিকিৎসাসেবা না পেয়ে রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তি হয়ে ওয়ার্ডে এসেও চিকিৎসা না পাওয়ায় রোগীদের স্বজনরা আতঙ্ক ও ক্ষোভে রয়েছেন।
এর আগে, রোববার দুপুরে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রজনতা শেবাচিম হাসপাতালের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করে। এ সময় ছাত্রজনতার ছোড়া ইটের আঘাতে এক চিকিৎসকসহ তিনজন আহত হন বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, গত ১৪ আগস্ট নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে তারা কর্মবিরতিতে যান। তবে হাসপাতাল পরিচালকের অনুরোধ ও রোগীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় এনে তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন এবং কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেন।
কিন্তু রবিবার (১৭ আগস্ট) আবারও আন্দোলনের নামে কিছু দুষ্কৃতকারী মেডিসিন বিভাগের ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. দিলীপ রায়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এছাড়া হাসপাতালের অন্যান্য স্টাফদের ওপরও হামলা হয় এবং পুরো হাসপাতাল ভবন লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে কর্মস্থলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শাখাওয়াত হোসেন সৈকত বলেন, ‘কর্মস্থলে নিরাপত্তার অভাবে ঘটনার পর থেকেই চিকিৎসকরা কর্মস্থল ত্যাগ করেন, ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। তবে হাসপাতাল পরিচালকের বিশেষ অনুরোধ এবং পুলিশের দেওয়া নিরাপত্তার কারণে ও মুমূর্ষু রোগীদের কথা বিবেচনায় আমরা মিড লেভেল চিকিৎসকরা বিকেল ৫টা থেকে শুধুমাত্র জরুরি সেবা চালু রেখেছি।”
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, ‘চিকিৎসকদের ওপর হামলার পর দুপুর থেকে তারা ভয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। চিকিৎসা না পেয়ে রোগী ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিস্থিতি বিবেচনায় চিকিৎসকদের অনুরোধ করে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের কর্মস্থলে ফিরিয়ে এনে আপাতত জরুরি সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।”