
স্টাফ রিপোর্টার : স্বৈরাচারের পতন হয়েছে এক বছর। কিন্তু এখনো বিভিন্ন দপ্তর ও সংগঠনে লুকিয়ে আছে স্বৈরাচারের দোসর। সম্প্রতি বরিশাল বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়বাতের একনিষ্ঠ গাজী শফিউর রহমানকে।
বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় গাজী শফিউর রহমানকে সদস্য করায় বিএনপি, জামায়াত সহ অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের মতে স্বৈরাচার পতনের এক বছরের পরেও এর দোসরকে বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় যুক্ত করা হয়েছে। যা স্বৈরাচারী মনোভাবের শামিল।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন গাজী শফিউর রহমান। আওয়ামী লীগে তার কোন পদপদবি না থাকলেও সিটি নির্বাচনে খোকন সেরনিয়াবাতের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন গাজী শফিউর রহমান।
সম্প্রতি ওই নির্বাচনের কিছু ছবি ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবিতে দেখা গেছে সিটির নির্বাচনী প্রচারণায় আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের ছবি সম্বলিত গেঞ্জি পড়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। পাশেই বক্তব্য দিচ্ছেন নৌকার মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ।
অপর একটি ছবিতে দেখা গেছে, সাবেক সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের বাসভবনে পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠিত এক দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে উপস্থিত গাজী শফিউর রহমান। খোকন সেরনিয়াবাতের পাশে দেখা গেছে শফিউর রহমানকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর ২০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা গাজী শফিউর রহমান। সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের দোসর জিয়াউর রহমান ওরফে ন্যাটো বিপ্লবের সহযোগী ছিলেন শফিউর রহমান। ৫ আগস্ট এর পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের দোসররা যখন দেশ ছাড়া হয়। ঠিক তখনই ভোল পাল্টে সাবেক ফুটবলার ও কোচ এর তকমায় বেঁচে যান শফিউর রহমান। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ওই তকমায়-ই পেয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য পদ।
এ ব্যাপারে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন শিকদার জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কমিটিতে স্থান পেলে এদের দ্বারা কোন ভাল কাজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। খোকন সেরনিয়াবাতের একনিষ্ঠকর্মী, সিটি নির্বাচনে নৌকার নির্বাচনী এজেন্ট, আওয়ামী লীগের দোসর কিভাবে এই কমিটিতে স্থান পায়। বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।’
গাজী শফিউর রহমান বলেন, আমার দলীয় কোন তকমা নেই। যে কারণে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই সিটিএসবি এক বছর তদন্ত করার পরেই আমার নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠান। মন্ত্রী মেয়রদের সাথে ছবি থাকতেই পারে। তার মানে তিনি ওই দল করেন এমন নয়। বিএনপি’র কিছু নেতাকর্মী ওই ছবি অন্য জায়গায় পাঠিয়ে আমাকে দলীয় তকমা দিতে চায়। তিনি আরো বলেন, খোকন সেরনিয়াবাতের নির্বাচনী প্রচারণা ও মেয়রের বাসভবনে দোয়া মোনাজাত অংশগ্রহণ করা দোষের কিছু নয়। আমি ওই দল করি কিনা সেটাই বিষয়।
এ বিষয়ে জানতে বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: রায়হান কাওসারকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।